ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ইলন মাস্কের দ্বন্দ্বের প্রভাব মার্কিন প্রশাসনের নানা ক্ষেত্রে পড়তে চলেছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে এই দ্বন্দ্বের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে চলেছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
আমেরিকা এবং মহাকাশ গবেষণায় সহযোগী দেশগুলির নভশ্চরদের আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্র বা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে পাঠাতে নাসা মাস্কের মালিকানাধীন সংস্থা স্পেসএক্স-এর উপর নির্ভরশীল ছিল। নাসার সঙ্গে স্পেসএক্স-এর চুক্তি অনুসারে, মাস্কের সংস্থার তৈরি ড্রাগন মহাকাশযানে চেপেই ২০৩০ সাল পর্যন্ত মহাকাশে যাওয়ার কথা ছিল নভশ্চরদের। কিন্তু এই চুক্তি আর বহাল থাকবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গত মার্চে আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে আটকে পড়া দুই নভশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোরকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল স্পেসএক্সের ড্রাগন যান। গত বছরের জুন মাসে সুনীতারা বোয়িং স্টারলাইনারে চেপে মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু মহাকাশযানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে সেখানেই আটকে পড়েন সুনীতারা। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব নেওয়ার পর সুনীতাদের বিষয়টি দেখার জন্য মাস্ককে অনুরোধ করেছিলেন। তার পর মহাকাশে স্পেসএক্সের যান পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়।
আরও পড়ুন:
এখন অবশ্য পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অন্য রকম ছিল। বর্তমানে ট্রাম্প আর মাস্কের বাগ্যুদ্ধ কার্যত সপ্তমে চড়েছে। মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, সরকারের থেকে যে ভর্তুকি পায় মাস্কের কোম্পানি টেসলা, তা-ও বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি।
দ্বিতীয় বারের জন্য হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেই মাস্ককে নিজের পরামর্শদাতা পদে নিয়োগ করেছিলেন ট্রাম্প। প্রশাসনিক খরচ কমানোর জন্য মাস্কের নেতৃত্বে তৈরি করেছিলেন সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতর বা ডিওজিই। সেই দফতরের প্রস্তাব মেনেই নাসার জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ কমানো হয়। এর ফলে নাসার একাধিক অভিযানও পিছিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে নাসার ভরসা ছিল মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের উপরেই। কিন্তু সেই ভরসার জায়গাটিও এ বার নড়বড়ে হয়ে গেল।