Advertisement
E-Paper

আসিয়ানকে সাক্ষী রেখেই প্রকাশ্যে নতুন ‘চতুর্ভুজ’, ঘেরাওয়ের মুখে চিনফিং

ম্যানিলায় আসিয়ার শিখর সম্মেলনেক ফাঁকে চতুর্ভুজ বৈঠকটি হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে আমেরিকা-জাপান-অস্ট্রেলিয়া-ভারতের এই সুস্পষ্ট অক্ষ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ১৩:৫৬
ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত সুবিশাল অঞ্চলে জোট গড়ল যে চার দেশ, সেই জোটের বিরুদ্ধে একা লড়া যে চিনের পক্ষে অসম্ভব, তা বেজিং ভালই বুঝতে পারছে। —প্রতীকী ছবি।

ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত সুবিশাল অঞ্চলে জোট গড়ল যে চার দেশ, সেই জোটের বিরুদ্ধে একা লড়া যে চিনের পক্ষে অসম্ভব, তা বেজিং ভালই বুঝতে পারছে। —প্রতীকী ছবি।

আসিয়ান শিখর সম্মেলনকে সাক্ষী রেখেই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল জুড়ে প্রবল শক্তিশালী জোট গঠনের পথে হাঁটল চার দেশ। আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত— চিনকে সব দিকে থেকে ঘিরে রাখতে ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা বিশাল এলাকায় এই চার দেশ একসঙ্গে কাজ করবে, এমন কথা শোনা যাচ্ছিল বহু দিন ধরেই। চার দেশ পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগও বাড়াচ্ছিল নানা ক্ষেত্রে। কিন্তু ‘চতুর্ভুজ’ গঠনের স্পষ্ট কোনও পদক্ষেপ ছিল না। ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায় এ বার সেই স্পষ্ট পদক্ষেপটিই করা হল। চিনের অস্বস্তি বহুগুণ বাড়িয়ে আসিয়ান শিখর সম্মেলনের ফাঁকে আলাদা বৈঠক করলেন ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা।

ম্যানিলায় চতুর্ভুজ বৈঠকটি হয়েছে রবিবার। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে আমেরিকা-জাপান-অস্ট্রেলিয়া-ভারতের এই সুস্পষ্ট অক্ষ। ভারতের তরফে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের পূর্ব এশিয়া সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব প্রণয় ভার্মা এবং দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব বিনয় কুমার। আমেরিকার তরফে ছিলেন প্রখ্যাত কূটনীতিক অ্যালিস ওয়েলস এবং জাপানের তরফে বৈদেশিক নীতি বিভাগের উপমন্ত্রী সাতোশি সুজুকি।

নয়াদিল্লি সূত্রের খবর, আসিয়ানের ফাঁকে আয়োজিত এই চতুর্ভুজ বৈঠক সফল হয়েছে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে এবং ভারত মহাসাগরে চিন যে ভাবে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েমের ছক কষেছে, তা যে কোনও ভাবেই সফল হতে দেওয়া হবে না, আমেরিকা-জাপান-অস্ট্রেলিয়া-ভারতের নবগঠিত অক্ষের তরফ থেকে সে বার্তা খুব স্পষ্ট করে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: সেনা গোয়েন্দাদের রিপোর্ট, সংঘাতেরই ছক চিনের

বৈঠক শেষে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে— এই চার দেশ যে অঞ্চলের মাধ্যমে নিজেদের সংযোগ ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে, সেই অঞ্চলে শাস্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য এবং কিছু অভিন্ন লক্ষ্য পূরণের জন্য কী কী করা দরকার, সে বিষয়েই আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে চিনেই নজর মোদীর

অস্ট্রেলিয়ার বয়ানে বলা হয়েছে, ‘‘অভিন্ন লক্ষ্য পূরণ এবং যৌথ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা যাবে কোন পথে, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে।’’ অস্ট্রেলিয়ার বয়ানে আরও জানানো হয়েছে, আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে ছিল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আইনভিত্তিক নির্দেশের পালন সুনিশ্চিত করা, জলপথে এবং আকাশপথে যাতায়াতের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং পারস্পরিক সংযোগ বাড়ানো। অস্ট্রেলিয়ার পরে জাপান এবং আমেরিকার তরফেও একই রকম বয়ান দেওয়া হয়।

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলপথে এবং আকাশপথে যাতায়াতের স্বাধীনতা রক্ষা করা বলতে যে এই চার দেশ কী বোঝাতে চাইছে, তা নিয়ে কূটনৈতিক শিবিরের একেবারেই সংশয় নেই। দক্ষিণ চিন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে এবং নাইন-ড্যাশ লাইনকে চিনের জলসীমা বলে উল্লেখ করে বেজিং যে সম্প্রসারণবাদী নীতি নিয়েছে, তাকে আমেরিকা, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া কখনওই মান্যতা দেয়নি। ওই কৃত্রিম দ্বীপগুলি চিনের এলাকা নয় এবং গোটা দক্ষিণ চিন সাগর চিনের জলসীমার মধ্যে পড়ে না— এ কথা আন্তর্জাতিক আদালতও জানিয়েছে। সেই রায়ের রূপায়ণ সুনিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক জলভাগ হিসেবে দক্ষিণ চিন সাগরের স্বীকৃতি ধরে রাখা যে এই চতুর্ভুজের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য, তা চার দেশের বয়ানেই স্পষ্ট। বেজিঙের কাছেও অত্যন্ত স্পষ্ট, কত বড় এবং কতটা শক্তিশালী অক্ষ ঘিরে ফেলেছে চিনকে।

India USA Japan Australia Quadrilateral Indo-Pacific China ভারত আমেরিকা জাপান অস্ট্রেলিয়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy