ফাইল চিত্র।
মাত্র তিন মাসে আগে কথা হয়েছিল, ইরান থেকে তেল আমদানি বাড়িয়ে দ্বিগুণ করবে ভারত। সে দেশের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে স্থির হয়, আমদানি দিন-প্রতি দু’লাখ ব্যারেল থেকে বাড়িয়ে ২০১৮’১৯-এ করা হবে ৩ লাখ ৯৬ হাজার।
এখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার কথা ঘোষণা করায় গোটা পরিকল্পনাটিই কার্যত ধসে পড়ল। ফের ইরানের উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তেল আমদানির ক্ষেত্রে সঙ্কট তৈরি হবে ভারতের ঘরোয়া বাজারে। এটা ঠিক যে, এর আগের নিষেধাজ্ঞার (২০১৫ সালের আগে) অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে শক্তিক্ষেত্রে ইরানের উপরে অতিরিক্ত নির্ভরতা কমিয়েছে সাউথ ব্লক। এই মুহূর্তে ইরানের তুলনায় বেশি তেল ইরাক এবং সৌদি আরব থেকে আমদানি করে ভারত। কিন্তু আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতি কী ভাবে সামলানো হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে তেলের দাম বাড়া এবং সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনাও প্রবল। আপাতত বাঁচোয়া একটাই, ইউরোপের দেশগুলি এখনও চুক্তি থেকে বেরোয়নি। ফলে এখনই হয়তো বিপাকে পড়বে না ভারত। ইন্ডিয়ান অয়েলের অন্যতম শীর্ষ কর্তা এ কে শর্মা এ দিন তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তবে কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, শুধু অর্থনৈতিক সঙ্কট নয়, ইরানের উপর ফের কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপলে মার খাবে ভারত-ইরান কৌশলগত প্রকল্পগুলিও। পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য চাবাহার বন্দর উন্নয়নে ৮৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে বসে রয়েছে দিল্লি। গত বছরের শেষে প্রথম পণ্যজাহাজটি চাবাহার হয়ে আফগানিস্তানে ঢুকেছে। সে সময় আমেরিকা উদার নীতি নিয়েছিল। বিদেশসচিব রেক্স টিলারসন বলেছিলেন, আমেরিকা সে দেশের মানুষকে নিশানা করতে চায় না। কিন্তু বর্তমান বিদেশসচিব মাইক পম্পেও কট্টর নীতি নিয়ে চলছেন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি হলে চাবাহার প্রকল্প শুধু মন্থর নয়, বন্ধও হয়ে যেতে পারে। ইরান-ভারত ইন্টারন্যাশনাল নর্থ সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডরটিও ভেস্তে যেতে পারে। এ দিনও ভারত বলেছে, আলোচনার মাধ্যমেই ইরান সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে ইরানের অধিকারকে মর্যাদা দেওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy