E-Paper

ভাঙা জাহাজেই আটকে রয়েছেন ভারতীয় নাবিকরা

২৫ মার্চ গভীর রাতে বল্টিমোরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে ধাক্কা মেরেছিল ‘দালি’। ধাক্কা মারার কিছু ক্ষণ আগে জাহাজটিতে বিদ্যুৎ চলে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন নাবিকেরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৪
বল্টিমোরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে ধাক্কা মেরেছিল ‘দালি’।

বল্টিমোরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে ধাক্কা মেরেছিল ‘দালি’। —ফাইল চিত্র।

এক সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে। এখনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাহাজ থেকে নামার অনুমতি পাননি নাবিকেরা। কবে সেই অনুমতি পাওয়া যাবে, তা-ও স্পষ্ট নয়। ফলে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পণ্যবাহী জাহাজ ‘দালি’-র ২১ জন কর্মী। যাঁদের মধ্যে ২০ জনই ভারতীয়।

২৫ মার্চ গভীর রাতে বল্টিমোরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে ধাক্কা মেরেছিল ‘দালি’। ধাক্কা মারার কিছু ক্ষণ আগে জাহাজটিতে বিদ্যুৎ চলে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন নাবিকেরা। জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে সেতুটি। অনুমান, মারা গিয়েছেন ছ’জন, যাঁদের মধ্যে চার জনের দেহ এখনও পাওয়া যায়নি।

কেন এই দুর্ঘটনা, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। যে ভাবে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল জাহাজটি, তাতে প্রাথমিক ভাবে সাইবার হানার তত্ত্ব উঠে আসছিল। কিন্তু হোয়াইট হাউস বিবৃতি দিয়ে সেই তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে। দিন কয়েক আগে জাহাজে গিয়ে তদন্তকারী দল বিপজ্জনক বস্তু ও দাহ্যপদার্থ সমেত ৫৬টি কন্টেনার পেয়েছিল।

সেতুর সঙ্গে ধাক্কায় জাহাজটিরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে। সামনের অনেকটা অংশ ভেঙে গিয়েছে সেটির। তবু আপাতত প্যাটাপস্কো নদীতেই নোঙর ফেলেই দাঁড়িয়ে আছে সেটি। ইউএস কোস্ট গার্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, জাহাজের কর্মীদের থাকার ও ব্যবহারের ঘরগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তা ছাড়া, জাহাজে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবারদাবারও আছে। দিন কয়েকের মধ্যেই জাহাজে একটি মেডিক্যাল টিম যেতে পারে বলে সূত্রের খবর। চিকিৎসকেরা নাবিকদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখবেন। এত বড় একটা দুর্ঘটনার পরে এবং এ ভাবে অনির্দিষ্টকাল জাহাজে থাকার ফলে নাবিকদের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারার আশঙ্কাও রয়েছে।

জাহাজের কর্মীদের মধ্যে ২০ জন ভারতীয় এবং এক জন শ্রীলঙ্কার বাসিন্দা। তাঁদের সঙ্গে যে অল্প কয়েক জন যোগাযোগ করতে পেরেছেন, তাঁদের অন্যতম বল্টিমোর ইন্টারন্যাশনাল সিফেয়ারার্স অ্যাসোসিয়েশনের জোশুয়া মেসিক। জোশুয়ার কথায়, ‘‘ওই নাবিকেরা খুবই মুশকিলে পড়েছেন। বুঝতেই পারছেন না, তাঁদের সঙ্গে কী করা হতে পারে। বাইরের জগতের সঙ্গে এখনও তাঁদের সে রকম সংযোগ হয়নি। আমাকে খালি ওঁরা বলছেন, ‘দুর্ঘটনার জন্য আমাদেরই কী দায়ী করা হচ্ছে? আমরা নিশ্চয় সবার চোখে খলনায়ক হয়ে গিয়েছি!’’ প্রসঙ্গত, এই নাবিকেরা আসন্ন দুর্ঘটনার আভাস এসওএস বার্তার মাধ্যমে বল্টিমোর প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। যার ফলে সেতুতে গাড়ি চলাচল দ্রুত বন্ধ করে দেয় বল্টিমোর পুলিশ। এবং আরও অনেক বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় বল্টিমোর। এই নাবিকদের তৎপরতার প্রশংসা করেছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

জাহাজবন্দি নাবিকরা এত কথা জানেন না বলেই ধারণা জোশুয়ার। দু’দিন আগে পর্যন্ত জাহাজে ওয়াইফাই বা অন্য কোনও ধরনের ইন্টারনেট পরিষেবা ছিল না। নাবিকদের সঙ্গে কথা বলে জোশুয়ার ধারণা হয়েছে যে, সিঙ্গাপুরের যে সংস্থাটি এই জাহাজের মালিক, তারা নাবিকদের মুখ খুলতে বারণ করেছে।

সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তা আর আতঙ্কেই দিন কাটাচ্ছেন ‘দালি’র নাবিকেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bridge collapse Indian Sailors Ship Baltimore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy