পরিস্থিতির নিরিখে বুধবার নিজেদের আকাশপথ বন্ধ করে দিল পাকিস্তান সরকার। জানানো হল, আপাতত পাকিস্তানের আকাশে যাত্রিবাহী বিমান উড়তে পারবে না। দেশের আকাশ শুধু বায়ুসেনা ব্যবহার করবে। লাহৌর, করাচি, ইসলামাবাদ-সহ দেশের সমস্ত বিমানবন্দরও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। লাহৌর বিমানবন্দরেই আটকে রয়েছেন চার ভারতীয়।
বুধবার সকালে শ্রীনগর, জম্মু, লেহ, পাঠানকোট, অমৃতসর, শিমলা, কাংড়া, কুলু-মানালি এবং পিথোরাগড় বিমানবন্দর সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ভারতও। বিমানবন্দরগুলির দিকে যে বিমানগুলি যাচ্ছিল, তাদের যাত্রীদের বলে দেওয়া হয়, বায়ুসেনার ‘অপারেশন’-এর জন্য বিমানবন্দর বন্ধ। বেশ কিছু উড়ান বাতিল হয়। কিছু মাঝ আকাশ থেকে অন্য শহরে উড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য বিমানবন্দরগুলি খুলে দেওয়া হয়। বিমান প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিংহ জানান, আপাতত বায়ুসেনা যেমন বলবে, তেমনই হবে।
তবে পাকিস্তানের আকাশপথ বন্ধের সিদ্ধান্তের ধাক্কায় বুধবার দুপুরের পর কার্যত সারা বিশ্বের উড়ানসূচি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। দুবাই থেকে দিল্লিগামী এমিরেটসের বিমান মুখ ঘুরিয়ে আমদাবাদে গিয়ে নামে। ইউরোপ এবং আমেরিকামুখী যে বিমানগুলি পূর্ব এশিয়া থেকে কলকাতার আকাশে ঢুকেছিল, তার মধ্যে ১৬টি বিমানকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মুম্বই দিয়ে ওমানে পাঠানো হয়। ৮টি বিমান কলকাতার আকাশ থেকে মুখ ঘুরিয়ে ফিরে যায় ব্যাঙ্কক, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে। বিকেলের পর থেকে বাতিলও হতে শুরু করে বাকি আন্তর্জাতিক উড়ানগুলি।
ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের আকাশপথের গুরুত্ব যথেষ্ট। পূর্ব থেকে পশ্চিম এবং উল্টোদিকে যাতায়াত করা বিমানের ৯০ শতাংশ এই দুই দেশের আকাশপথ ব্যবহার করে। তাতে সময় কম লাগে। জ্বালানি কম খরচ হয়। অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, হংকং-সহ বিভিন্ন দেশের বিমান কলকাতার আকাশে ঢুকে দিল্লি হয়ে পাকিস্তানে যায়। সেখান থেকে আরও পশ্চিমে উড়ে যায়। আবার উল্টোমুখে করাচি হয়ে বিমানগুলি দিল্লি, কলকাতা ছুঁয়ে পূর্বে উড়ে যায়।
এই বিমানগুলিকে মুম্বই- মাসকট হয়ে উড়তে গেলে অনেক ঘুরতে হবে। জ্বালানি পুড়বে বেশি। প্রতিটি বিমান গন্তব্যে ওড়ার আগে হিসেব করে জ্বালানি ভরে। বুধবার দুপুরে কলকাতা ঢোকার পরে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, তাই এয়ারওয়েজ, কোয়ান্টাসের পাইলটেরা যখন জানতে পারেন যে পাক আকাশপথ বন্ধ, তখন অনেক বিমানই দেশে ফেরত যায়। জানা যায়, ওমান ঘুরে ইউরোপ যাওয়ার মতো জ্বালানি তাদের সঙ্গে নেই। রাত ১২টার পরে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিমান এ ভাবে কলকাতা থেকে করাচি হয়ে যাতায়াত করে। ওই সময়েই সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল হবে বলে আশঙ্কা কলকাতার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy