পুড়ছে ইংল্যান্ড। আর কপালের ভাঁজ গভীর হচ্ছে জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের।
গত কয়েক দিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে এ দেশে। কড়া রোদ ও কষ্টকর আর্দ্রতায় জেরবার হচ্ছেন মানুষ। আর বৃষ্টি যখন হচ্ছে, সেটাও মাত্রাছাড়া। হড়পা বান ও বন্যায় বিধ্বস্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, গত দশকে রোদের ঝাঁঝ বেড়েছে ৮ শতাংশ। ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরে তাপমাত্রা ছিল যে সব দিনে, তার সংখ্যা ১৯৬০-এর দশক থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরে তাপমাত্রা ছিল যে সব দিনে, তার সংখ্যা বেড়ে তিন গুণ আর ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের উপরে তাপমাত্রা ছিল যে সব দিনে, তার সংখ্যা বেড়ে চার গুণ হয়েছে।
উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীব্যাপী সমুদ্রে জলস্তর বেড়েছে। সেই বৃদ্ধির যে গড়, তার থেকে ব্রিটেনের চারপাশে সমুদ্রের জলস্তর বেড়েছে অনেক বেশি। ফলে উপকূলবর্তী এলাকায় বন্যা হচ্ছে ব্যাপক হারে। তা ছাড়া, গত ২০ বছরে গড় বৃষ্টিপাতও বেড়েছে ৫০ শতাংশ। এবং এই বৃষ্টির বেশির ভাগটাই বর্ষাকালে হয়নি, হয়েছে অক্টোবর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে। ১৭৬৭ সাল থেকে ব্রিটেনে জলবায়ুর রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে। তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত ২০ বছরে আবহাওয়ার এই বেয়াড়াপনা সব মাত্রা ছাড়িয়েছে। এবং এর জন্য দায়ী অতিরিক্ত ফসিল জ্বালানির ব্যবহার, এক বাক্যে মেনে নিচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা।
বন্যা ও তাপপ্রবাহে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে জুন মাসের শেষে ছ’শো জনের বেশি মারা গিয়েছেন। তখন তীব্র তাপপ্রবাহ চলছিল দেশে। তার পরে পরপর আরও ২টি তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে মধ্য ইংল্যান্ড। জলবায়ু বিশারদেরা বারবার সতর্ক করছেন, এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে উত্তরোত্তর খারাপ হবে পরিস্থিতি। বাড়বে মৃত্যু। তবে সরকারের তরফে এখনই কোনও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। আবহাওয়া দফতরের এক শীর্ষ গবেষক মাইক কেন্ডনের কথায়, “অতীতে যে ধাঁচে জলবায়ু পরিবর্তন হত, তা এখন আর দেখা যাবে না। এখন পরিবর্তন হচ্ছে দ্রুত ও ব্যাপক হারে। আমরা পরিবেশের যে ক্ষতি করছি, তা বন্ধ না করলেবিপর্যয় আসন্ন।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)