Advertisement
E-Paper

আক্রমণেই ধ্বংস ইউক্রেনের বিমান, তবে ভুল করে, জানাল ইরান

প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানিও এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “এটা একটা মারাত্মক ভুল।”

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:৫৭
এখানেই ভেঙে পড়ছিল বিমানটি। ছবি: এএফপি।

এখানেই ভেঙে পড়ছিল বিমানটি। ছবি: এএফপি।

ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই ভেঙে পড়েছিল ইউক্রেনের যাত্রিবাহী বিমান। শনিবার এক বিবৃতিতে জানাল ইরান। দুর্ঘটনার পর থেকেই এই তত্ত্বটিই জোরালো হচ্ছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই বিষয়টি অস্বীকার করছিল ইরান। অবশেষে তারাও মেনে নিল ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে পাশাপাশি ইরান এটাও জানিয়েছে, বিষয়টি ‘অনিচ্ছাকৃত’ ভাবেই ঘটেছে।

সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এই ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়ে ইরান সেনার তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়। কী ভাবে এমনটা হল সেনাবাহিনীতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হবে বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃতদের পরিবারের কাছে এই ঘটনার জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছে ইরান। প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানিও এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “এটা একটা মারাত্মক ভুল।”

ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ টুইটারে জানান, একটা শোকের দিন। আমেরিকার সঙ্গে এমন একটা উত্তেজনার আবহে ভুলবশত এই ঘটনার জন্য অত্যন্ত দুঃখিত। মৃতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এর জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”

আরও পড়ুন: টুইট-বোমা! বিজেপির অন্দরের সঙ্ঘাত প্রকাশ্যে মোদীর সফরের আগেই

আরও পড়ুন: নৈহাটির বিস্ফোরণ-কাণ্ডে দু’পাড়ের ৪৮৪টি বাড়ির ক্ষতি

গত ৮ জানুয়ারি ১৭৬ জন যাত্রী নিয়ে তেহরানের ইমাম খোমেইনি বিমানবন্দর থেকে উড়েছিল বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি। গন্তব্যস্থল ছিল ইউক্রেনের কিয়েভের বোরিস্পিল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কিন্তু ওড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই পারান্দে ও শাহরিয়ার শহরের মাঝামাঝি জায়গায় ভেঙে পড়ে সেটি। বিমানে বিমানে ৮২ জন ইরানি, ১১ ইউক্রেনীয়, ১০ সুইস, ৪ আফগান, ৬৩ কানাডীয়, ৩ ব্রিটিশ এবং ৩ জন জার্মান নাগরিক ছিলেন। সব যাত্রীরই মৃত্যু হয় এই দুর্ঘটনায়।

মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি কম্যান্ডার কাসেম সোলেমানির হত্যার পর থেকেই তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে একটা উত্তেজনার আবহ তৈরি হয়। এর পরই ইরাকে মার্কিন সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। তাদের ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রই আঘাত করে ইউক্রেনের বিমানটিকে। ইরানের রিভলিউশনারি গার্ডস-এর এলাকার কাছ দিয়েই যাচ্ছিল বিমানটি। সন্দেহ করা হচ্ছে তখনই ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত করে সেটিকে।

প্রাথমিক ভাবে দুর্ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের তত্ত্বটি জোরালো হতে শুরু করে। ইউক্রেন, আমেরিকা প্রথমে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়। বিমানের ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষা করতে চাইলে আমেরিকাকে সরাসরি না বলে দেয় ইরান। তদন্তে আমেরিকার হস্তক্ষেপ অনুমতি দিতে অস্বীকার করে তারা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে জানায়, ‘ভুলবশত’ এ কাজ করেছে ইরান। এর পরে কানাডা, ব্রিটেনও একই দাবি তুলে জানায়, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রেই বিমানটি ভেঙে পড়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানান। বিষয়টি নিয়ে যখন টানাপড়েন চলছে সে সময়েই ক্ষেপণাস্ত্র হানার একটি ভিডিয়ো সামনে আসে। ফলে বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হানার তত্ত্বটি আরও জোরালো হয়। যদিও ইরান সেই ভিডিয়ো সত্যতা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলে। শুক্রবার তেহরানের মুখপাত্র আলি রাবিয়েই ওই ভিডিয়ো প্রসঙ্গে বলেন, “সংবাদমাধ্যমে যা দাবি করা হচ্ছে তা আসলে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বাধানোর একটা ছক। ভবিষ্যতেই প্রমাণ হয়ে যাবে এই সব দাবি ভিত্তিহীন।”

রাবিয়েইয়ের এই দাবির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উল্টো সুর শোনা গেল ইরানের মুখে। এ বার তারা স্বীকার করে নিল বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। তবে সেটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ভাবে।

অন্য দিকে, পশ্চিমী দেশগুলো একের পর এক সরব হওয়ায় কার্যত চাপে পড়ে ইরান। শেষমেশ বোয়িং এবং আমেরিকার ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)-কে তদন্তের অনুমতি দেয় তারা।

Ukraine Iran Plane Crash ইউক্রেন ইরান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy