আমেরিকার উপর আর ভরসা রাখতে পারছে না ইরান! আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা কতটা ইতিবাচক হবে, তা নিয়ে সংশয়ে তেহরান। তাদের সন্দেহ, ইজ়রায়েল যা করেছে, তার সামনে একটি ‘ঢাল’ তৈরির চেষ্টা করতেই আমেরিকা আলোচনার কথা বলছে। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, “আমরা জানি না এর পরেও আমেরিকাকে কী ভাবে বিশ্বাস করব।”
ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকা কোনও সামরিক পদক্ষেপ করবে কি না, তা নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কূটনৈতিক পথে ইরান এবং ইজ়রায়েলের সংঘর্ষ থামানো সম্ভব কি না, তা দেখার জন্য দু’সপ্তাহ সময় দিতে চান তিনি। তবে শান্তি আলোচনার বিষয়ে আমেরিকার উপর কতটা ভরসা রাখা যায়, তা নিয়ে সংশয়ে আরাঘচি। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘এনবিসি নিউজ়’কে এক সাক্ষাৎকারে আরাঘচির অভিযোগ, ট্রাম্প যে আলোচনার কথা বলছেন, তা আসলে ইরানের উপর ইজ়রায়েলি হামলাকে আড়াল করার চেষ্টা।
ওয়াশিংটন আসলে কূটনীতির সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করছে বলেও অভিযোগ তোলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “আমেরিকা যে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান সূত্র বের করতে চায়, সেই দৃঢ়তা আমেরিকার আধিকারিকদের মধ্যে দেখতে পাওয়া দরকার।” তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল যা করেছে, তাকে আড়াল করার জন্যই যে আসলে আমেরিকা আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে, তা আমরা বুঝে গিয়েছি। আমরা জানি না এর পরেও ওদের (আমেরিকাকে) কী ভাবে বিশ্বাস করব।”
আরও পড়ুন:
ইতিমধ্যে তিন ইউরোপীয় দেশ— ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধানও ওই বৈঠকে ছিলেন। শুক্রবার রাতেই তুরস্কে পৌঁছে গিয়েছেন আরাঘচি। শনিবার ৫৭টি ইসলামিক রাষ্ট্রের জোট ‘অর্গানাইজ়েশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন’ (ওআইসি)-র বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। ইস্তানবুলে ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলিকে আরাঘচি জানান, ইরানের সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর বিশ্বের কাছে তুলে ধরার জন্য তিনি সব রকম চেষ্টা করবেন।
পশ্চিম এশিয়ার সংঘর্ষের আবহে ইজ়রায়েল ইতিমধ্যে নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছে। আমেরিকা পাশে থাক বা না-থাক, ইজ়রায়েল তা নিয়ে আর ভাবিত নয়। তাদের লক্ষ্য ইরানের সমস্ত পরমাণুঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া। এমনটাই জানালেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে (স্থানীয় সময়) হোয়াইট হাউস জানায়, ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকা অস্ত্র ধরবে কি না, তা নিয়ে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প।
আবার নেতানিয়াহুও জানিয়ে দেন, ইরানের পরমাণুঘাঁটিগুলি ধ্বংসের লক্ষ্যে মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে। এই কাজের জন্য অন্য কোনও দেশের ‘সবুজ সঙ্কেত’ তাঁদের প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে ইজ়রায়েলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কারও অনুমতি নেওয়া হবে না।