Advertisement
E-Paper

‘আমরা প্রস্তুত রয়েছি’, ইরানের ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তার নিশানায় কি ইজ়রায়েল? পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা পশ্চিম এশিয়ায়

রয়টার্স আমেরিকার গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইজ়রায়েল। ওই প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর তেহরান তেল আভিভকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল বলে মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ১২:২৫
(বাঁ দিকে) ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই এবং ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই এবং ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আমরা প্রস্তুত রয়েছি। ইরানের আপাত নির্বিবাদী এই তিন শব্দের বার্তা পশ্চিম এশিয়ায় পরমাণু যুদ্ধের ডঙ্কা বাজাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। বুধবার গভীর রাতে (ভারতীয় সময় অনুসারে) সমাজমাধ্যমে ইরানের সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে ইরানের জাতীয় পতাকার ছবি দিয়ে উপরে লেখা হয়, “আমরা প্রস্তুত রয়েছি।” কিন্তু কোন বিষয়ে প্রস্তুতির কথা বলা হচ্ছে, তা ব্যাখ্যা করা হয়নি।

ইরান ব্যাখ্যা না-দিলেও পশ্চিম এশিয়ার ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, ওই তিন শব্দের বার্তায় আদতে ইজ়রায়েলকে নিশানা করেছে ইরান। বুধবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্স আমেরিকার গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইজ়রায়েল। ওই প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসার পর তেহরান তেল আভিভকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্য দিকে, পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষর নিয়ে আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে বোঝাপড়া কার্যত ভেস্তে গিয়েছে। এই বিষয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও। তবে সংবাদ সংস্থা এপি ওমানের বিদেশমন্ত্রী বদর-অল-বুসাইদিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রবিবার সে দেশে এই বিষয়ে আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ পর্যায়ের আলোচনা হবে।

এই পরিস্থিতিতে বুধবার আমেরিকার উপর চাপ বাড়িয়েছে ইরান। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে বলন, ‘‘পরমাণু চুক্তি নিয়ে ষষ্ঠ দফার আলোচনা ব্যর্থ হলে এবং সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ইরান আঞ্চলিক (পশ্চিম এশিয়ার) মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালাবে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যদি আমাদের উপর সংঘাতের পরিস্থিতি চাপিয়ে দেওয়া হয়, মনে রাখবেন, এই অঞ্চলের সমস্ত মার্কিন সেনাঘাঁটি কিন্তু আমাদের নাগালে রয়েছে।’’

ইরানের এই হুঁশিয়ারির পরেই পশ্চিম এশিয়ার একাধিক দেশের মার্কিন দূতাবাস থেকে আধিকারিককের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “তাঁদের (আমেরিকার আধিকারিক) সরানো হচ্ছে। কারণ, এটা একটা ভয়ঙ্কর জায়গা হয়ে উঠতে পারে। পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তা আমরা দেখব। আমরা আপাতত সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।” ট্রাম্প নির্দিষ্ট কোনও দেশের নাম না-করলেও একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের পড়শি দেশ ইরাক থেকে নিজের দেশের আধিকারিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমেরিকার নাগরিকদেরও ওই এলাকায় না-যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এমনিতে গাজ়া ভূখণ্ডে ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যে সংঘাতের কারণে কয়েক বছর ধরেই অস্থিরতা রয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়। ইজ়রায়েল এই পরিস্থিতিতে বুধবার ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা প্রশমনে কোন ঘটনা সহায়ক হতে পারে? ট্রাম্প বলেন, “ওদের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকতে পারে না। খুব সহজ বিষয় এটি। আমরা এটা হতে দেব না।” কোনও দেশের নাম না-করলেও ট্রাম্প যে ইরানের উদ্দেশেই তোপ দেগেছেন, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে পশ্চিম এশিয়ায় নয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

Iran Nuclear War israel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy