Advertisement
E-Paper

বিতর্কিত হিজাব আইন প্রত্যাহার ইরানের! পিছু হটা, না নেপথ্যে ‘সংস্কারক’ প্রেসিডেন্ট

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছিল, দেশের মেয়েদের কঠোর ভাবে হিজাব-বিধি অনুসরণ করে চলতে হবে। ঢেকে রাখতে হবে মাথার চুল, কাঁধ এবং পা। নিয়মের অন্যথা হলে কড়া শাস্তির সংস্থানও ছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৫৯
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ান।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ান। —ফাইল চিত্র।

বিতর্কিত হিজাব আইন বলবৎ করার আগেই তা প্রত্যাহার করে নিল ইরান। সে দেশের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ান জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত আইনটি ‘অস্পষ্ট এবং এর সংস্কার প্রয়োজন’। আইনটি গত শুক্রবার কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়, দেশের মহিলাদের কঠোর ভাবে হিজাব-বিধি অনুসরণ করে চলতে হবে। ঢেকে রাখতে হবে মাথার চুল, কাঁধ এবং পা। নিয়মের অন্যথা হলে কড়া শাস্তির সংস্থানও ছিল। অল্প নিয়মভঙ্গে জরিমানা নেওয়া হত। আর সর্বোচ্চ সাজা ছিল ১৫ বছরের কারাবাস।

ইরানের গোঁড়া ধর্মীয় শাসনের এই হিজাব ‘ফতোয়া’ নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্কের ঝড় ওঠে। সে দেশের একাধিক নারী সংগঠন তো বটেই, বিশ্বের অগ্রণী মানবাধিকার সংগঠন ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ এই আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়। তার পর এই আইন কার্যকর না-করা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির যাঁরা নিবিড় পর্যবেক্ষক, তাঁদের একাংশের মতে এর নেপথ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট পেজেকশিয়ান, যিনি ‘সংস্কারমুখী’ রাজনীতিক হিসাবেই পরিচিত। চলতি বছরের গোড়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে ইরানের এই চিকিৎসক-রাজনীতিক জানিয়েছিলেন, তিনি হিজাব নিয়ে কঠোর বিধিনিষেধের বিপক্ষে। সে ক্ষেত্রে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খামেনেইয়ের ‘ইচ্ছার বিরুদ্ধে’ গিয়ে পেজেকশিয়ান মহিলাদের স্বাধীনতার জানলা খুলে দিলেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

পর্যবেক্ষকদের আরও একটি অংশের মতে, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইরান এখন বহুমুখী চাপের মধ্যে রয়েছে। তার সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র সংগঠন হামাস, হিজ়বুল্লা এবং হুথি আমেরিকা-ইজ়রায়েলি আক্রমণে কোণঠাসা। তার মধ্যেই ইরান-মিত্র বাশার আল-আসাদ সিরিয়ায় ক্ষমতা হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে হিজাব বা গোঁড়া আইন প্রণয়নে ‘যথেষ্ট সাহস’ ইরান দেখাতে পারছে না বলে ওই অংশের মত।

ইরানে হিজাব-বিতর্ক অবশ্য নতুন নয়। ২০২২ সালে ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকেও হিজাব না-পরার ‘অপরাধে’ তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নীতিপুলিশ। ২৪ ঘণ্টা যেতে না-যেতেই পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। মাহসার মৃত্যুর পর গোটা ইরানে যখন প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল, সেই সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল প্রতিবাদী এক কুর্দিশ র‌্যাপারকে। সম্প্রতি এই পোশাক-ফতোয়ার প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসলামিক আজ়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আহু দারইয়াই প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরে হেঁটেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের পুলিশ। হিজাব বিরোধী অবস্থান যাঁরা নেন, তাঁদের মনোরোগ রয়েছে এমনটা দাবি করে মনোচিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করার অভিযোগও রয়েছে তেহরান প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

Iran Hijab Row Iran Hijab Hijab Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy