পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে নিজের এক্স হ্যান্ডলে লাগাতার ‘মানসিক হেনস্থা’র অভিযোগ তুলে আসছেন জেলবন্দি ইমরান খান। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সেই এক্স অ্যাকাউন্ট নাকি ভারত থেকে চালিত হয়! এমনই দাবি পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফের।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফকে ইমরানের ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল। আদালতের শুনানিতে ভার্চুয়ালি ইমরান কী ভাবে অংশ নিয়েছিলেন, সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়। সঞ্চালকের বক্তব্য ছিল, ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিচারক ইমরানের কথা শুনতেই পাননি। তার পরেও শুনানি চলেছে। ফলে সেই শুনানিকে আদৌ ন্যায্য বলা যায় কি না, তা নিয়েই পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিলেন সঞ্চালক। তাতে খোয়াজা বলেন, ‘‘উনি (ইমরান) জেলে বসেই এক্স হ্যান্ডল ব্যবহার করেন।’’
এর পরেই সঞ্চালক খোয়াজা পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘‘আগের দিনই আপনি বললেন যে, ইমরান খানের এক্স হ্যান্ডল ভারত থেকে পরিচালিত হয়। আপনাকে বলতে শুনেছি আমি।’’ সঞ্চালকের সংযোজন, ‘‘ইমরান জেলে না ভারতে?’’ এর জবাব দিতে গিয়েই দৃশ্যত বিড়ম্বনায় পড়েন খোয়াজা বলেন, ‘‘হয় উনি জেলে বসে এক্স হ্যান্ডল ব্যবহার করছেন, নয়তো অন্য কেউ করছেন।’’ সঞ্চালক খোয়াজার কাছে এই দাবির সপক্ষে প্রমাণও চান। জবাবে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘এ ভাবে প্রকাশ্যে তো প্রমাণ দেওয়া যায় না।’’
দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে গত দু’বছর ধরে পাকিস্তানের আদিয়ালা জেলে বন্দি রয়েছেন ইমরান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। সম্প্রতি তিনি বেশ কয়েক বার এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে দাবি করেছেন যে, জেলে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর কিছু হয়ে গেলে দায়ী থাকবেন সেনাপ্রধান মুনির। পিটিআই প্রধান এক্স হ্যান্ডলে পোস্টে লিখেছিলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে দুর্ব্যবহারের মাত্রা আরও বাড়ানো হয়েছে। আমার স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। এমনকি, তাঁর ঘরের টেলিভিশনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।’’
ইমরানের দাবি, এই সব কিছুর নেপথ্যে রয়েছেন আসিম মুনির। তাঁর নির্দেশেই জেলের মধ্যে অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন সস্ত্রীক ইমরান। ইমরানের বক্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন, আইএসআই প্রধানের পদ থেকে আমি মুনিরকে সরিয়ে দিয়েছিলাম। এর পরেই পিটিআই-এর জ়ুলফি বুখারির মাধ্যমে বুশরা বিবির সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলে, আমি তা প্রত্যাখান করে দিই। বুশরা বিবির মাধ্যমে আমাকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মুনির।” ইমরানের দাবি, এর পর থেকেই মুনিরের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে বুশরা বিবি এবং তাঁর উপরে।
তিনি পাকিস্তানের মানুষের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘আমি সারাজীবন জেলে কাটাতে পারি কিন্তু কোনও ভাবেই অন্যায় এবং অত্যাচারের কাছ মাথা নোয়াব না। পাকিস্তানের নাগরিকদেরও বলছি, কোনও অবস্থাতেই অন্যায়কে মাথা নিচু করে মেনে নেবেন না।’’