৪৯১ দিন পর বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাঁরা। ফিরেছেন ঘরে। কিন্তু এখন তাঁদের দেখে কাউকেই চেনার উপায় নেই। ওজন কমেছে অনেক। জরাজীর্ণ অবস্থা। শীর্ণকায়, দুর্বল শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরলেন তিন ইজ়রায়েলি বাসিন্দা।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইজ়রায়েলের তিন বাসিন্দা ঘরে ফিরলেন ঠিকই কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে কবে ফিরতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় পরিবারের মধ্যেই। যুদ্ধবিরতি শর্ত মেনে হামাস এবং ইজ়রায়েল ধাপে ধাপে বন্দিমুক্তি দিচ্ছে। শনিবারই হামাস তিন জন ইজ়রায়েলি বাসিন্দাকে ছেড়ে দেন। তাঁরা হলেন এলি শারাবি, ওহাদ বেন এবং অর লেভি। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর তিন জনকেই পণবন্দি করে স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাস। বন্দিদশায় থাকাকালীন শারাবি ভেবেছিলেন হামাসের হামলায় তাঁর স্ত্রী এবং দুই কন্যারই মৃত্যু হয়েছে। তিনি নিজেও বাঁচার আশা ছেড়়ে দিয়েছিলেন। তবে অবশেষে বাড়ি ফিরলেন। ফিরে বাড়িতে স্ত্রী, কন্যাদের দেখতে পেয়ে আনন্দিত হন। বলেন, ‘‘আমি জানতাম না আমার পরিবার বেঁচে আছে। এত দিন পর তাদের কাছে ফিরতে পেরে খুশি।’’
তবে তিন বন্দির মুক্তির পর তাঁদের অবস্থা দেখে হতবাক ইজ়রায়েল প্রশাসন। ইজ়রায়েল কর্তৃপক্ষের তরফে, তিন জনেরই বন্দিদশার আগের এবং মুক্তির পরের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৫০০ দিন বন্দিদশায় কী ভাবে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তিন জনই রোগা, অত্যন্ত দুর্বল এবং ফ্যাকাসে। ওহাদ শাশুড়ি জামাইকে দেখে প্রথমে চিনতেই পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘ওকে (ওহাদ) দেখতে কঙ্কালের মতো লাগছিল।’’ কেন এমন অবনতি হয়েছে বন্দিদের? ইজ়রায়েল প্রশাসন জানিয়েছে, অপুষ্টি, চিকিৎসার অভাবেই এমন অবস্থা হয়েছে। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, এর প্রতিশোধ নেওয়া হবেই!
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছিল হামাস। ওই হানাদারিতে মৃত্যু হয় প্রায় ১২০০ জনের। ২৫০ জনকে পণবন্দি করা হয়। ওই তিন ইজ়রায়েলি নাগরিক সেই তালিকায় ছিলেন। হামাসের সেই হানাদারির পরেই গাজ়ায় পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করে ইজ়রায়েল। ১৫ মাসের যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৪৭ হাজার প্যালেস্টাইনি নাগরিকের। শেষ পর্যন্ত কাতারের মধ্যস্থতায় এবং আমেরিকা ও মিশরের প্রচেষ্টায় গত ১৫ জানুয়ারি রাতে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইজ়রায়েল সরকার এবং হামাস। ১৯ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হয়েছে। তার পর থেকেই যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত হিসাবে শুরু হয়েছে বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া।