Advertisement
E-Paper

জেএমবি ভারতে এখন জেএমআই

১৯৯৮-তে বাংলাদেশের মাটিতে মূলত মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে গঠিত জেএমবি-র সঙ্গে ২০২০-র জেএমবি-র অনেক ফারাক রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।

অনমিত্র চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:০১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জঙ্গিগোষ্ঠী জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-কে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) আল কায়দা-র শাখা বলে দাবি করলেও বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গি-বিরোধী বাহিনীর তাতে আপত্তি রয়েছে। বাংলাদেশের এই বাহিনীর এক কর্তার মতে, ‘‘এক সময়ে এরা আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও, এখন আইএস (ইসলামিক স্টেটস) জঙ্গিদের ভাবধারাকে অনুসরণের চেষ্টা করে।’’ তবে তাঁর মতে, কোনও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গেই এদের তেমন যোগাযোগ নেই। জেএমবি-র এখনকার নেতৃত্ব আইএস নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও খুব সফল হয়েছে বলা যায় না। আইএস এক সময়ে আবু মহম্মদ আল বাঙালি নামে এক জঙ্গিকে ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার প্রধান মনোনীত করে। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই সেই জঙ্গি সিরিয়ায় নিহত হয়।

তবে ১৯৯৮-তে বাংলাদেশের মাটিতে মূলত মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে গঠিত জেএমবি-র সঙ্গে ২০২০-র জেএমবি-র অনেক ফারাক রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। সম্প্রতি ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেফতার করা ৯ জন জেএমবি জঙ্গিকে জেরা করে তাঁরা জেনেছেন, ভারতে তাদের সংগঠনটি প্রথমে জেএমবি-র একটি জেলা শাখা হিসেবে কাজ করলেও এখন পূর্ণাঙ্গ সংগঠন হিসেবে কাজ করছে। জেএমআই বা ‘জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া’ নামে তাকে ডাকা হচ্ছে। শায়খ আবদুর রহমান এবং সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইয়ের সঙ্গে জেএমবি-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘদিন সামরিক শাখার দায়িত্বে থাকা সালাউদ্দিন এখন জেএমবি-র ভারতীয় শাখা বা জেএমআই-এর প্রধান। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকাতেও তাদের লোকজন ছড়িয়ে রয়েছে বলে খবর পেয়েছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।

তবে বাংলাদেশের ওই গোয়েন্দা কর্তার মতে, সর্বত্র তাদের সংগঠন যে খুব পোক্ত, সে কথা বলা যায় না। রোহিঙ্গা মুসলিমেরা বৌদ্ধ অধ্যুষিত মায়ানমার সরকারের হাতে নির্যাতিত হওয়ার পরে জেএমবি ভারতের বুদ্ধগয়া এবং অন্য বৌদ্ধ ধর্মস্থানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। ভারতীয় গোয়েন্দারা যে তা ভেস্তে দিতে পেরেছেন, তার পিছনে তাঁদের কৃতিত্ব রয়েছে বলে জানান ঢাকার ওই গোয়েন্দা কর্তা। কারণ, জঙ্গিদের বিষয়ে নিয়মিত তাঁরা গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান করেন।

আরও পড়ুন: ‘সেফ করিডোর’ বাংলায় কোন পথে শাখা মেলছে জিহাদি নেটওয়ার্ক

বাংলাদেশ পুলিশ বরাবরই জেএমবি-কে আইএস বা আল কায়দার শাখা বলে মানতে নারাজ। তবে নেটদুনিয়ায় আইএস যে ভাবে তাদের ভাবধারা প্রচার করে, বহু শিক্ষিত ধর্মপ্রাণ যুবকেরও তাতে মগজ ধোলাই হয়। পাঁচ-ছ বছর আগে বাংলাদেশে শিক্ষিত যুবকদের জঙ্গি দলে নাম লেখানোর প্রবণতা বিপজ্জনক আকার নিলে গোয়েন্দারাও নেটে জঙ্গি ভাবধারার প্রচার রুখতে উঠেপড়ে লাগেন।

সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান। তার ফলে এখন আগের প্রবণতায় লাগাম পরানো গিয়েছে বলে দাবি করছে বাংলাদেশ পুলিশ। তবে জেএমবি নেতৃত্বও এখন হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মতো বড়সড় আক্রমণের পথে না-গিয়ে একক জঙ্গিদের উদ্বুদ্ধ করে ছোটখাটো হামলা চালানোর কৌশল নিয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এর প্রধান উদ্দেশ্য সংগঠনকে বাঁচানো বলে পুলিশ মনে করছে। ভারতেও জঙ্গিরা সেই কৌশল নিয়ে চলেছে— এমন দাবি বাংলাদেশ পুলিশের।

JMB JMI Terrorists NIA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy