Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Narendra Modi

Indo China Relation: চিনের মোকাবিলায় আর্থিক কাঠামো ঘোষণা বাইডেনের

আমেরিকা, ভারত এবং জাপান-সহ মোট তেরোটি দেশ এতে যুক্ত। ফলে প্রত্যেকেই তাদের সুবিধে এবং চাহিদার দিকটি সামনে আনবে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ০৭:৩৭
Share: Save:

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিন-বিরোধী সুরকে এক তারে বাঁধতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করলেন ‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইকনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারিটি’ (আইপিইএফ)-এর। মঙ্গলবার টোকিয়োর চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াড-এর শীর্ষ সম্মেলন। তার আগে আজ আমেরিকার এই অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক সংযোগ সাধনের প্রয়াসে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ বেজিং। তারা আগাম ক্ষোভ জানিয়ে রবিবারেই বলেছে, চিনকে আটকানোর জন্যই এই কৌশল।

সূত্রের মতে, আজ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হলেও পাকাপোক্ত চেহারা পেতে এই ফ্রেমওয়ার্কের লাগবে আরও দেড় থেকে দু’বছর। আমেরিকা, ভারত এবং জাপান-সহ মোট তেরোটি দেশ এতে যুক্ত। ফলে প্রত্যেকেই তাদের সুবিধে এবং চাহিদার দিকটি সামনে আনবে। চলবে তা নিয়ে দরকষাকষি। নীতিগত ভাবে ভারত যে এই পরিকল্পনার সঙ্গেই রয়েছে, এর আগেই সেই ইঙ্গিত দিয়েছিল সাউথ ব্লক। আজ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ‘আইপিইএফ’-এর জন্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার সব দেশের সঙ্গে কাজ করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ভারত আইপিইএফ-এর প্রশ্নে সকলের সঙ্গে কাজ করবে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্যে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চায়। অর্থনৈতিক প্রয়োজনে নিজেকে পরিবর্তন করা দরকার বলে বিশ্বাস করে ভারত। আমি বিশ্বাস করি যে এই কাঠামোটি তিনটি স্তম্ভকে (বিশ্বাস, স্বচ্ছতা এবং সময়োপযোগিতা) শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে এবং এটি ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে উন্নতি, শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে।”

মোদীর বক্তব্য, এই সমুদ্রপথ বরাবরই উৎপাদন, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের কেন্দ্র ছিল। ভারতও ঐতিহাসিক ভাবে এই অঞ্চলে বাণিজ্যপ্রবাহের কেন্দ্রে রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে ভারতের প্রাচীনতম বাণিজ্যিক বন্দরটি তাঁর নিজ রাজ্য গুজরাতের লোথালে অবস্থিত।

২০২১ সালের অক্টোবরে জো বাইডেন প্রথম এই বিষয়টি উত্থাপন করেন। পরে এই প্রস্তাবটি আমেরিকার আইনসভা কংগ্রেসে আলোচিত হয়। বলা হয়, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইকনমিক ফ্রেমওয়ার্ক’ প্রথাগত বাণিজ্য চুক্তি হবে না। এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক নীতি, জোগান শৃঙ্খল, অবকাঠামো এবং কার্বন নিঃসরণের মতো বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এছাড়া কর ও দুর্নীতি দমন বিষয়গুলিতেও সংযোগ তৈরি করা হবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে। আজ এ বিষয়ে বাইডেন বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে বর্তমান শতাব্দীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করা যাবে। পাশাপাশি ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্র দেশগুলির সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিও জোরদার করা হবে।’’ বলা হচ্ছে, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থনীতি, জোগান শৃঙ্খল, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যৌথ প্রচেষ্টা চালানো হবে।

কূটনৈতিক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই ব্যবস্থা কোনও ভাবেই বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নয়। এর আগে এশিয়ার বিভিন্ন দেশগুলির সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য চুক্তি ছিল। কিন্তু তা ছেড়ে বেরিয়ে যান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ আমেরিকার বাজার এশিয়ার দেশগুলির জন্য খুলে দিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে আমেরিকাকে কমজোরি করা হচ্ছে, এই যুক্তিতে তাঁর দেশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। ট্রাম্পের নিজের রক্ষণশীল নীতির পক্ষেও সেটা মানানসই ছিল না। কিন্তু এই (আইপিইএফ)-এ যে দেশগুলিকে সঙ্গে নিচ্ছে আমেরিকা (ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজ়িল্যান্ড, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, তাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম) তাদের কারও কাছে নিজেদের বাজার খোলা হবে না। অথবা পণ্য আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড় দেওয়ার মতো বিষয়গুলিই থাকবে না। এই ব্যবস্থা মূলত সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য সহজ করার জন্য, প্রশাসনিক জটিলতা কমানোর জন্য একটি কৌশলমাত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Japan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE