ইরান এবং ইজ়রায়েলের বোঝাপড়ায় আসা উচিত! এমনই দাবি করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সূত্রেই আরও এক বার ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত থামিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করলেন তিনি।
রবিবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি লেখেন, “ইরান এবং ইজ়রায়েলের বোঝাপড়ায় আসা উচিত আর তারা সেটা করবেও।” তার পরেই ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি। জানান যে, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য করার বিষয়টি আলোচনায় আনার পরেই ‘দুই দুর্দান্ত নেতা’ (নরেন্দ্র মোদী এবং শাহবাজ় শরিফ) দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন এবং সংঘাত বন্ধ করেন।
ট্রাম্প এর আগে ভারত-পাক সংঘর্ষ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করে বলেছিলেন, “পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছিল। হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দেখা যেতে শুরু করল। আমরা এটিকে থামাতে পেরেছি। দু’দিন আগেও আমার মনে হচ্ছিল, হয়তো এটির সমাধান হয়নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সমস্যা মিটে গিয়েছে। আমরা ওদের (ভারত এবং পাকিস্তান) সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছিলাম। আমরা বলেছিলাম যুদ্ধের বদলে ব্যবসা করার কথা।” আমেরিকার প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তার সরকারের প্রস্তাবে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়কেই বেশ খুশি দেখাচ্ছিল।
প্রথম দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকার সময় সার্বিয়া এবং কসোভার মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে লাগাম পরিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। এ-ও জানিয়েছেন যে, পূর্বসুরি জো বাইডেন কিছু বোকা বোকা সিদ্ধান্ত নিলেও তিনি দু’দেশের সংঘাত থামিয়ে দেবেন। ট্রাম্পের বক্তব্য, নীল নদের উপর একটি বাঁধ নির্মাণ নিয়ে সংঘাতে জড়িয়েছে মিশর এবং ইথিওপিয়া। কিন্তু তাঁর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি এখন শান্ত হয়েছে বলে দাবি ট্রাম্পের। পরিশেষে ট্রাম্প ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত প্রসঙ্গে বলেছেন, “অনেক ফোনাফুনি, বৈঠক চলছে। আমি নিজেও অনেক কিছু করছি। কিন্তু আমি কোনও কিছুর জন্যই কৃতিত্ব নিতে চাই না। মানুষ সব বোঝে। চলুন, পশ্চিম এশিয়াকে আবার মহান করে তুলি।”
শুক্রবার ‘চিরশত্রু’ ইরানের উপর আকাশপথে অন্যতম বৃহৎ হামলাটি চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। তার নেপথ্যে আমেরিকার হাত দেখেছেন অনেকেই। ট্রাম্প এই হামলাকে একপ্রকার সমর্থনও করেন। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দেন, এই হামলার কথা তিনি আগে থেকেই জানতেন। তা ঠেকানোর চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু ইরান অনড় থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তবে শনিবার ট্রাম্প দাবি করেন যে, এই নিয়ে আমেরিকার ‘কিছু করার ছিল না’। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারির সুরে জানান, ইরান যদি কোনও ভাবে আমেরিকার উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে, তা হলে ‘তছনছ’ করে দেওয়া হবে। এমন প্রত্যাঘাত করা হবে, যা আগে হয়নি। তবে শনিবারও দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা করানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। রবিবার আরও স্পষ্ট করে বোঝাপড়ায় আসার বার্তা দিলেন।