E-Paper

‘দু’টি সন্তানকে নিয়েবাঁচতে চাই’, আর্জিকুমিল্লার নির্যাতিতার

কুমিল্লার ধর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ অব্যাহত। মূলত হিন্দু সংগঠনগুলি বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫ ০৯:১৪
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

এ দুনিয়ায় কী ঘটল না-ঘটল, তা ভাবতে চান না বাংলাদেশের কুমিল্লার মুরাদনগরের নির্যাতিতা হিন্দু তরুণী। তাঁর কাতর আবেদন, ‘‘একটু শান্তিতে বাঁচতে দিন।’’ মুরাদনগরের ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ যখন তপ্ত, তার মধ্যেও সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে নির্যাতন চলছেই। শনিবার ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানার অন্তর্গত ঢোলারহাট ইউনিয়নে হিন্দু পাড়ায় অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মস্থানে ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে।

মুরাদনগরে হিন্দু তরুণীকে গণধর্ষণ ও তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধরের ভিডিয়ো শনিবার থেকে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশ জুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। আসরে নেমে পড়ে রাজনৈতিক দলগুলি এবং অরাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠন। রবিবার একটু বেশি রাতেই নির্যাতিতা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কার্যত ভেঙে পড়েন। তাঁর আকুতি, ‘‘আমার মানসম্মান সব গিয়েছে। সবাই মুক্তি পাক। স্বামী এই ঘটনা শোনার পরে আর আমাকে ফোন করে না। দু’টি শিশুসন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই। দশ জনের শান্তি চাই, দেশের শান্তি চাই। আমার যা হওয়ার তো হয়েই গিয়েছে। আমি মামলা তুলে নেব।’’ তিনি পুলিশকেও জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ফজর আলির বাড়ি তাঁর বাপের বাড়ির এলাকাতেই। তিনি বাপের বাড়িতে এলে তাঁকে উত্ত্যক্ত করত সে।

এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচারের দাবি জানিয়ে সোমবার বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের ৩৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক। নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

কুমিল্লার ধর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ অব্যাহত। মূলত হিন্দু সংগঠনগুলি বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র ঐক্য রবিবার রাতে চট্টগ্রামে মিছিল-সমাবেশ করে। নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল। ঘটনায় রাজনীতির রং গাঢ় হচ্ছে। ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগের উপরে দায় চাপিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রকের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এই ঘটনার জন্য বিএনপি-কে দায়ী করেছেন বলে সূত্রের খবর। বিএনপি অবশ্য বলছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আসিফ ওই কথা বলেছেন।

এই ঘটনায় যখন বাংলাদেশ তপ্ত তখন ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানার অন্তর্গত ঢোলারহাট ইউনিয়নে হিন্দুদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। অভিযোগ, জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে গত শনিবার দুপুরে মো. শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি লোকজন নিয়ে বিজয়চন্দ্র রায়ের বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ির দু’টি মন্দিরেও ভাঙচুর করা হয়। এর পরে বাড়ি সংলগ্ন জমি পতাকা পুঁতে দখল করে বলেও অভিযোগ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, শহিদুল ও তার লোকেরা ওই পাড়ার হিন্দুদের বাড়িঘর ভেঙে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং ওই জায়গা থেকে উচ্ছেদের হুমকি দিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kumilla

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy