বাংলাদেশি রক গায়ক জেমসের অনুষ্ঠান ভন্ডুল হয়ে যাওয়া নিয়ে এ বার মুখ খুলল সে দেশের জেলা প্রশাসন। ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের দাবি, সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই অনুষ্ঠানটি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
শুক্রবার ফরিদপুর জেলা স্কুলের মাঠে একটি কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী জেমসের। কিন্তু কনসার্ট শুরুর আগেই এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ‘বহিরাগত’ কিছু লোক সেখানে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। চলে ইটবৃষ্টিও। ওই ঘটনার জেরে বাতিল হয়ে যায় জেমসের অনুষ্ঠান। তাঁর কনসার্ট বাতিলের নির্দেশ দেয় স্থানীয় জেলা প্রশাসনই। অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ায় ইতিমধ্যে বিস্তর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই পরিস্থিতিতে এ বার মুখ খুললেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তাঁর বক্তব্য, শুক্রবার রাতের ওই অনুষ্ঠানটি ছিল ফরিদপুর জেলা স্কুলের নিজস্ব অনুষ্ঠান। সেখানে জায়গাও ছোট ছিল। তার মধ্যে বাইরেও বহু লোকের ভিড় হয়ে গিয়েছিল। জেলা প্রশাসকের দাবি, যাঁরা বাইরে ছিলেন, তাঁরাই ভিতরে প্রবেশ করতে না পেরে ইট-পাটকেল ছুড়েছেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘হালকা মারামারি’ হয়েছে, তা-ও মেনে নেন তিনি। কামরুলের কথায়, পড়ুয়া এবং বহিরাগতদের মধ্যে মারামারি হওয়ায় সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে তাঁরা কনসার্টটি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশের তরুণ নেতা ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। জায়গায় জায়গায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুর, তাণ্ডবের কবল থেকে রেহাই পায়নি ছায়ানট, উদীচীর মতো সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলিও। এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে হামলা এবং ইটবৃষ্টির জেরে জেমসের অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যাওয়ায় ফের সে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের দাবি, এটি শুধুই স্কুলের পড়ুয়া এবং বহিরাগতদের মধ্যে ঝামেলার ঘটনা। এ ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও যোগ নেই বলেই দাবি জেলা প্রশাসক কামরুলের। তাঁর দাবি, জেমসের অনুষ্ঠানের আগের দিন সেখানে অপর একটি বাংলা গানের ব্যান্ডের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে কোনও সমস্যা হয়নি। তবে গতরাতে বহিরাগতদের ভিড় বেশি হয়ে যাওয়ার ফলেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে দাবি কামরুলের।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার রাতে ওই বিশৃঙ্খলার জেরে জেমস এবং তাঁর ব্যান্ড নগরবাউল মঞ্চে ওঠার আগেই তা ভন্ডুল হয়ে যায়। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে মুখ খুলেছেন বাংলাদেশের রক গায়ক। গোটা ঘটনাকে সম্পূর্ণ ভাবে আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা এবং ব্যর্থতা বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর ব্যান্ডের মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর জানান, যখন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তখন তাঁরা গেস্ট হাউসে ছিলেন। পরে বিশৃঙ্খলা চরম আকার ধারণ করলে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, অনুষ্ঠান বাতিল করা হচ্ছে। তার পরে তাঁরা ঢাকায় ফিরে আসেন।