Advertisement
০৭ মে ২০২৪

মুক্তমনা ব্লগার খুন এ বার মলদ্বীপে

বাংলাদেশ নয়। এ বার মলদ্বীপে খুন হলেন মুক্তমনা ব্লগার ইয়ামিন রশিদ (২৯)। রশিদের পরিবার জানিয়েছেন, আজ মালেতে তাঁর আবাসনের সিঁড়িতে জখম অবস্থায় পাওয়া যায় রশিদকে। তাঁর বুকে ও ঘাড়ে মিলিয়ে মোট ১৬টি আঘাতের চিহ্ন ছিল।

ইয়ামিন রশিদ

ইয়ামিন রশিদ

সংবাদ সংস্থা
মালে শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩১
Share: Save:

বাংলাদেশ নয়। এ বার মলদ্বীপে খুন হলেন মুক্তমনা ব্লগার ইয়ামিন রশিদ (২৯)। রশিদের পরিবার জানিয়েছেন, আজ মালেতে তাঁর আবাসনের সিঁড়িতে জখম অবস্থায় পাওয়া যায় রশিদকে। তাঁর বুকে ও ঘাড়ে মিলিয়ে মোট ১৬টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। গত পাঁচ বছরে মলদ্বীপে খুন হওয়া রশিদ তৃতীয় ব্যক্তি যিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রশিদের ব্লগের নাম ‘দ্য ডেইলি প্যানিক’। ব্লগে তাঁর পরিচয়, অবাধ্য লেখক। লিখেছেন, ‘‘খবর তো দেবই। আশা রাখি, তার সঙ্গে মলদ্বীপের কেঠো রাজনীতি নিয়ে বিদ্রুপাত্মক কিছু লেখার।’’ তাঁর লেখায় আক্রমণের নিশানায় থাকতেন গোঁড়া মুসলিমরা। সরকারের সমালোচনা তো থাকতই ।

২০১৪-র অগস্ট থেকে নিখোঁজ রশিদের আর এক বন্ধু সমালোচক ও ব্লগার আহমেদ রিলওয়ান। মলদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির দাবি, রিলওয়ানকে খুঁজে বার করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন রশিদ। দেশের তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় পুলিশি তদন্তের খুঁটিনাটি জানার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন তিনি। রিলওয়ানের পরিবারের সঙ্গেই মলদ্বীপের পুলিশের বিরুদ্ধে মামলাও করেন রশিদ। সরকার-বিরোধী প্রতিবাদে সামিল হওয়ায় ২০১৫-য় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। টানা ২১ দিন হেফাজতে ছিলেন তিনি। রশিদ কয়েক বার প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছিলেন। গত ডিসেম্বরে পুলিশের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।

রশিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও বিরোধী নেতা মহম্মদ নশিদ টুইটে লিখেছেন, এক সাহসী কণ্ঠকে নির্মম ভাবে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই প্রেসিডেন্ট স্বেচ্ছা নির্বাসনে রয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডার দূতাবাস থেকেও এই হত্যার নিন্দা করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন সব সরকারি সংস্থাকে তাদের সবটুকু দিয়ে অপরাধীদের খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তে আন্তর্জাতিক সাহায্যের দাবি করেছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নশিদ।

যদিও প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের জমানায় বিরোধী দলনেতাদের ধরপাকড়ের সমালোচনা চলছে কিছু দিন ধরেই। গত মাসেই পার্লামেন্টের দখল নিতে উদ্যোগী হয়েছিল বিরোধীরা। সেই চেষ্টায় জল ঢালার পরে রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়তেই থাকে। এই মাসের শুরুতেই আটক করা হয়েছিল বিরোধী জুমহোরি পার্টির নেতা কোয়াশিম ইব্রাহিমকে। ছেড়ে দেওয়ার পরেও আবার গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

মুসলিম অধ্যুষিত মলদ্বীপে ধর্মের নামে গোঁড়ামি ও কট্টর ভাবধারার মূলে কুঠারাঘাত করাই ছিল রশিদের মতো ব্লগারদের উদ্দেশ্য। তাঁদের এ হেন পরিণতিতে চিন্তায় দেশের শিক্ষিত সাধারণ মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blogger Yameen Rasheed Stabbed to death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE