E-Paper

হাসপাতালে ইজ়রায়েলি হামলার নিন্দা বহু দেশের

রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা হাসপাতালে হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। রয়টার্স, এপি-র মতো সংবাদ সংস্থা থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনও নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৫৪
হামাস-ইজ়রায়েলের ২২ মাসের এই সংঘর্ষের আবহেই অন্তত ১৯২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

হামাস-ইজ়রায়েলের ২২ মাসের এই সংঘর্ষের আবহেই অন্তত ১৯২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। —ফাইল চিত্র।

গাজ়া ভূখণ্ডের নাসের হাসপাতালে ইজ়রায়েলি বাহিনীর হামলায় সাংবাদিক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে গত কালই মুখ খুলেছিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। কার্যত নজিরবিহীন ভাবেই ওই হামলাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও নেতানিয়াহুর উপর থেকে আন্তর্জাতিক চাপ কমছে না। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা হাসপাতালে হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। রয়টার্স, এপি-র মতো সংবাদ সংস্থা থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনও নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব।

রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত সংগঠনের তরফে গত কালই হাসপাতালে হামলার ঘটনার নিন্দা করা হয়েছিল। আজ রাষ্ট্রপু্ঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসও এই ঘটনার দ্রুত এবং নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘এই ভয়াবহ সংঘাতের আবহে যে সব সাংবাদিক এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছেন, তাঁদেরকেই এ ভাবে হত্যা করাটা ভয়াবহতার নিদর্শন।’’ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাংবাদিকেরা এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি প্রথমে জানিয়েছিলেন, হাসপাতালে হামলার কথা তিনি শোনেননি। পরে সব শুনে ট্রাম্প শুধু বলেছেন, তিনি আদৌ এই ঘটনায় খুশি নন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ হাসপাতালের উপরে হামলার ঘটনাকে ‘অসহনীয়’ আখ্যা দিয়েছেন। নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি-ও। কালকের হামলার খবর পাওয়ার পর থেকে তিনি আতঙ্কিত বলেও জানিয়েছেন ল্যামি। কানাডা সরকারও আলাদা করে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সংবাদ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উপরে এই ধরনের হামলা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। চিনের শি জিনপিং সরকারও গোটা ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।

খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে হামলা নিয়ে সরব রয়টার্স এবং এপি-র মতো সংবাদ সংস্থাও। রয়টার্সের এডিটর-ইন-চিফ আলেসান্দ্রা গ্যালোনি এবং এপি-র এগ্‌জ়িকিউটিভ এডিটর জুলি স্পেসের সই করা একটি চিঠি নেতানিয়াহু সরকারকে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবা এলাকায় কী ভাবে ইজ়রায়েলি বাহিনীর পর পর দু’বার হামলা চালাল, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। তবে সাংবাদিকদের অধিকাররক্ষার জন্য তৈরি বিভিন্ন সংগঠন এর মধ্যেই দাবি করেছে, সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধ করার নজির ইজ়রায়েলের এই প্রথম নয়। হামাস-ইজ়রায়েলের ২২ মাসের এই সংঘর্ষের আবহেই অন্তত ১৯২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ‘দ্য কমিটি টু প্রোটেক্স জার্নালিস্টস’ নামে আমেরিকার একটি সংগঠন জানাচ্ছে, সেই ১৯৬৭ সাল থেকে প্যালেস্টাইনি সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল ইজ়রায়েল সরকার। সেই সময়ে প্রথম বার প্যালেস্টাইনের পশ্চিম ভূখণ্ড দখল করে ইজ়রায়েল। সেই অধিকৃত জমি নিয়ে ইজ়রায়েল সরকারের সমালোচনামূলক কোনও প্রতিবেদন যাতে প্যালেস্টাইনি সাংবাদিকেরা বার করতে না পারে, সে জন্য তখন থেকেই ছিল সেনা এবং আইনি নজরদারি।

এর মধ্যেই জেরুসালেমের ওল্ড সিটির কাছে এক ঐতিহ্যবাহী গির্জার দেওয়ালে ‘স্প্রে পেন্ট’-এর মাধ্যমে গ্রাফিতি করার অপরাধে বছর সাতাশের এক ইজ়রায়েলি যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্প্রে পেন্ট দিয়ে ‘গাজ়ায় হলোকস্ট চলছে’ লিখেছিলেন ওই যুবক। এর আগে শহরের অন্য প্রান্তেও একই বার্তা লিখেছিলেন তিনি। তখনকার মতে আটক করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়াও হয়েছিল। তবে এ বার তাঁর সহজে মুক্তি মিলবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

gaza Israel Army

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy