Advertisement
E-Paper

৭.১ মাত্রায় কম্পনের পর তিব্বতে আরও ৪০ বার ‘আফটারশক’! মৃত অন্তত ৯৫, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ লক্ষ

৭.১ মাত্রার জোরালো ভূমিকম্পের পর তিব্বতে অন্তত ৪০ বার কম্পন অনুভূত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিব্বতে ৯৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কম্পন অনুভূত হয়েছে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমেও।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:২৩
মঙ্গলবার সকালে তিব্বতে ভূমিকম্পের প্রভাব পড়ে নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং ভুটানে।

মঙ্গলবার সকালে তিব্বতে ভূমিকম্পের প্রভাব পড়ে নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং ভুটানে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

তিব্বতের ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ৯৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ১৩০ জনকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি। ভূমিকম্পের ধাক্কা কাটিয়ে শুরু হয়েছে উদ্ধারের চেষ্টা। মৃত এবং আহতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে ৭.১ তীব্রতার জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তিব্বত। যার প্রভাব পড়ে নেপাল, ভুটান এবং ভারতেও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শিগাতসের এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত আট লক্ষ মানুষ। ভূমিকম্পের উৎসস্থল তিব্বতের তিংরি প্রদেশে। এই অঞ্চলটিকে এভারেস্টের উত্তরের প্রবেশদ্বার হিসাবে দেখা হয়।

প্রথম জোরালো ভূমিকম্পের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না-উঠতে পর পর কম্পন (আফটারশক) হতে থাকে ওই অঞ্চলে। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পের পর ৪০টিরও বেশি কম্পন হয়েছে সেখানে। তার মধ্যে ১৬টি কম্পনের মাত্রা ছিল ৩-এর বেশি। ভূমিকম্পের পর বেশ কিছু ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে রয়টার্স। তারা জানিয়েছে, ওই ভিডিয়োটি তিব্বতের লাৎসে শহরের কাছে। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, রাস্তার ধারে দোকান ভেঙে পড়েছে। ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে রাস্তার উপর। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, ভূমিকম্পের উৎসস্থলের কাছাকাছি অঞ্চলে প্রচুর ভবন ভেঙে পড়েছে।

সাধারণত এই ধরনের জোরালো মাত্রার কোনও ভূমিকম্পের জেরে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, সরকারি আধিকারিকেরা ভূমিকম্পের জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ জানার চেষ্টা করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলির মৃত এবং আহতের সংখ্যা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন।

তিব্বতে ভূমিকম্পের উৎসস্থল থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। সেখানেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। প্রাণভয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন কাঠমান্ডুর বাসিন্দারা। প্রভাব পড়েছে এভারেস্টের পাদদেশে অবস্থিত নেপালের সোলুখুম্বু জেলাতেও। সেখানকার মুখ্য জেলা আধিকারিক অনোজ রাজ ঘিমিরে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সোলুখুম্বুতে জোরালো কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কারও মৃ্ত্যু বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। নেপালের স্থানীয় পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে। ভুটানের রাজধানী থিম্পু এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে, বিশেষ করে বিহার, উত্তরবঙ্গ, সিকিমের মতো জায়গাগুলিতে কম্পন অনুভূত হয়েছে।

এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরেও ৬.৪ মাত্রার জোরালো ভূমিকম্প হয় নেপালে। সেই বারের ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় হিমালয়ের কোলে থাকা এই পাহাড়ি দেশে। ২০০৮ সালে দক্ষিণ পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশে এক ভূমিকম্পে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৫ সালে নেপালের কাঠমান্ডুর কাছেও ৭.৮ মাত্রার এক জোরালো ভূমিকম্প হয়। তাতে প্রায় ৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন কয়েক হাজার মানুষ। ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে সেটিই নেপালের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প। নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং দক্ষিণ-পশ্চিম চিনে মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্পের খবর পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, ভারতীয় পাতের সঙ্গে ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষের প্রবণতার কারণে এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের আশঙ্কা বেশি থাকে।

Tremors earthquake Tibet China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy