এক দিকে যখন যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর করে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা চলছে গাজ়ায়, ঠিক তখনই বার বার প্যালেস্টাইনিদের উপরে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েল। বহু ত্রাণবহনকারী ট্রাকও গাজ়ায় ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠছে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে অবশ্য কর্ণপাত করতে নারাজ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার তিনি ফের বলেন, গাজ়ার যুদ্ধবিরতি এখনও ‘ভাল ভাবেই’ চলছে।
হামাস পরিচালিত প্রশাসনের দাবি, ১১ অক্টোবর শান্তিচুক্তি কার্যকর করা হলেও তার পর থেকে অন্তত ৮০ বার সে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইজ়রায়েল। ওই দিনের পর থেকে একাধিক বার আকাশপথে হামলা চালিয়েছে তারা। হামলা চালানো হয়েছে ট্যাঙ্ক, টানেলের সাহায্যেও। সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৫৭ জন প্যালেস্টাইনির দেহ আনা হয়েছে গাজ়ার বিভিন্ন হাসপাতালে। সকলেই ইজ়রায়েলি হামলার শিকার বলে স্থানীয়দের দাবি। যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে এ নিয়ে মোট ৯৭ জনের নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বহু মহিলাও। হামলার জেরে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজ়া সিটির একাধিক জায়গা।
হামলা চালানোর পাশাপাশি গাজ়ায় ত্রাণও ঢুকতে দিচ্ছে না ইজ়রায়েল। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ২০২৪ সাল থেকেই ত্রাণবাহী ট্রাকের জন্য বন্ধ রাফার রাস্তা। কারেম আবু সালেম আর আল-কারারা দিয়ে বেশ কয়েকটি ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হলেও গাজ়াবাসী তাতে বিশেষ আশা দেখছেন না।
হামলার অভিযোগ যদিও সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করেছে ইজ়রায়েলের বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। তাদের দাবি, ইজ়রায়েল সেনাকে তিনি আগে থেকে কোনও হামলা চালানোর নির্দেশই দেননি। শুধু বলেছেন, যদি যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে হামাস তাদের উপরে হামলা চালাতে আসে, তা হলে অবশ্যই পাল্টা হামলা চালাতে পারে আইডিএফ।
ইজ়রায়েলের দাবি, নিহত পণবন্দিদের দেহ ফেরাতে যথেষ্ঠ দেরি করছে হামাস। যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী ২৮ জনের দেহ ফেরানোর কথা হলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২টি দেহ ফিরিয়েছে প্যালেস্টাইন। হামাস যদিও বলেছে, ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে দেহ উদ্ধার করে পাঠাতে কিছুটা সময় লেগে যাচ্ছে তাদের। তবে যতটা দ্রুত সম্ভব এই প্রক্রিয়া শেষ করতেচায় তারাও।
এ বিষয়ে কোনও মতামতই অবশ্য দেননি ট্রাম্প। রবিবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙা নিয়ে ট্রাম্পের কী মত। উত্তরে তিনি প্রথমে বলেন, যথেষ্ঠ ভাল ভাবেই কার্যকর হয়েছে ওই যুদ্ধবিরতি। যেটুকু অশান্তি ছড়িয়েছে তা হামাসের ভিতর থেকেই কোনও ভাবে ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে তাঁর দাবি। এক সাংবাদিক যখন জোর দিয়ে জিজ্ঞেস করেন, গাজ়ার উপরে ইজ়রায়েলের হামলা চালানো উচিত হয়েছিল কি না, তখন তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কোথায় হামলা?’ উত্তরে গাজ়ার কথা ফের উল্লেখ করা হলে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের উত্তর, ‘আমি পরে জানাব আপনাকে’।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)