চিনের সঙ্গে যে অদূর ভবিষ্যতে নরম-গরম নীতি নিয়ে চলবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার, তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। ট্রাম্প একদিকে চিনের সঙ্গে দৌত্য শুরু করার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। পাশাপাশি, দায়িত্ব নেওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই চিন-বিরোধী চতুর্দেশীয় গোষ্ঠী কোয়াড-এর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের মঞ্চও তৈরি করা হল ওয়াশিংটন ডিসিতে। আমেরিকার বিদেশসচিব পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বহুপাক্ষিক বৈঠকটি সারলেন মার্কো রুবিয়ো— কোয়াডের সদস্য ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রীদের সঙ্গে।
বৈঠকের পর সরাসরি চিনের নাম না করা হলেও ভারত, জাপান, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীরা যৌথ বিবৃতিতে বেজিংকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে জবরদস্তি করে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একতরফা স্থিতাবস্থার বিঘ্ন ঘটানো হলে, তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আলাদা ভাবে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও জানিয়েছেন, কোয়াডের বৈঠক থেকে স্পষ্ট বার্তা উঠে এসেছে যে এই অনিশ্চিত দুনিয়ায় বিশ্বের ভালর জন্য কাজ করবে কোয়াড।
ওয়াশিংটনে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে কোয়াড বৈঠকের পরে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কোয়াডের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের যে বৈঠক হল, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে বন্ধু রাষ্ট্রগুলির ক্ষেত্রে (আমেরিকার) বৈদেশিক নীতি কতটা অগ্রাধিকার পায়। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল যাতে মুক্ত, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধশালী থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।” তাঁর কথায়, ‘‘আরও বৃহৎ ভাবে চিন্তা করা, নিজেদের পদক্ষেপকে আরও দৃঢ় করা এবং সমন্বয় মজবুত করার বিষয়ে একমত হয়েছি আমরা। আজ যে বৈঠক হল, তা থেকে স্পষ্ট বার্তা গেল যে এই অনিশ্চিত এবং অস্থির দুনিয়ায় কোয়াড বিশ্বের কল্যাণের জন্য একটি শক্তি হয়ে থাকবে।’’
কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতিতেও সেই বিষয়টিই উঠে এসেছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আগামিদিনে কোয়াডের কাজকর্মকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা আগ্রহী। ভারত যে পরবর্তী কোয়াড নেতাদের সম্মেলনের আয়োজন করবে (২০২৫ সালেই হবে), তার প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি আমরা নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাব।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)