Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চুরির তথ্য কি রাশিয়ার হাতে! জেরবার জুকেরবার্গ

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকায় কাজ করার সময়েই চুরিটা আঁচ করেছিলেন কানাডার এই যুবক। পরে তিনিই ফেসবুকের তথ্য বেহাত হওয়ার কথা ফাঁস করে দেন। যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ-সহ।

মার্ক জুকেরবার্গ। ছবি: এএফপি।

মার্ক জুকেরবার্গ। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ব্লুমবার্গ শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৯
Share: Save:

অ্যানালিটিকা কাণ্ডে নয়া মোড়। ফেসবুক থেকে চুরি যাওয়া তথ্যের একটা বড় অংশ এখনও রাশিয়ার হাতে থাকতে পারে বলে জল্পনা উস্কে দিলেন ক্রিস্টোফার ওয়াইলি।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকায় কাজ করার সময়েই চুরিটা আঁচ করেছিলেন কানাডার এই যুবক। পরে তিনিই ফেসবুকের তথ্য বেহাত হওয়ার কথা ফাঁস করে দেন। যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ-সহ। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘যে অধ্যাপক অ্যানালিটিকার হয়ে তথ্য-চুরির নেপথ্যে ছিলেন, তাঁর সঙ্গে ব্রিটেনের পাশাপাশি রাশিয়ারও ভাল যোগাযোগ ছিল।’’

অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে গোড়া থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। একই কারণে কাঠগড়ায় রাশিয়াও। মার্কিন বিচার বিভাগ এখনও তদন্ত করছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ-হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওড়ালেও, তা মানতে নারাজ বিরোধী তাঁর বিরোধী শিবির। এখন ওয়াইলিও মস্কোর দিকে আঙুল তোলায় ডেমোক্র্যাটদের পালে হাওয়া লাগল বলেই মনে করছেন মার্কিন কূটনীতিকরা। তাঁদের আশঙ্কা, ওই তথ্য কাজে লাগিয়ে পিছন থেকে হলেও ট্রাম্পের হয়ে প্রচারে বড় ভূমিকা নিয়ে থাকতে পারে মস্কো। ওয়াইলির বিস্তারিত সাক্ষাৎকার আগামী রবিবার সম্প্রচার করা হবে।

ফেসবুক-কর্তা অবশ্য তার আগেই যাচ্ছেন মার্কিন কংগ্রেসে। কাল, মঙ্গলবার থেকে শুনানি চলবে দু’দিন। তথ্য ফাঁস-কাণ্ডে তাঁকে বিঁধতে মরিয়া মার্কিন সেনেটের ৪৩ জন সদস্য। এই ক’দিনে বিস্তর প্রশ্ন জমেছে মানুষের মনেও। তথ্য চুরির কথা মেনে নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন জুকেরবার্গ। নেটিজেনের আস্থা ফেরাতে এখন আরও কয়েক বছর সময় চাইছেন। কথা দিয়েছেন, নিশ্ছিদ্র করবেন। তবু প্রশ্ন উঠছে— ১১ বছর ধরে এত বড় একটা ফাঁক তৈরি হল, আর তিনি কিছুই টের পাননি! অনেকেই বলছেন, এটা কর্তারই ব্যর্থতা। কিন্তু তিনিই যে হেতু সংস্থার সর্বেসর্বা, বোর্ডের চেয়ারম্যান, সিইও— তাই তিনি নিজে থেকে না সরলে ‘ছাঁটাই’-এর প্রশ্নই ওঠে না। তা হলে কী উপায়? উত্তর নেই। আবার ভবিষ্যতেও যে এমন ‘ভুল’ হবে না, তা-ও প্রমাণ-সহ ব্যাখ্যা করতে পারেননি ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ।

নেটিজেনদের মনেই প্রশ্ন জমছে— ফেসবুকে দেওয়া তথ্যের মালিক আসলে কে? প্রোফাইলের মালিক যদি ব্যবহারকারীই হন, তা হলে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে এত বিজ্ঞাপন কেন? কার কী উদ্দেশ্য তা তো জানা নেই! একই সঙ্গে দাবি উঠছে, বিজ্ঞাপন-ছাড়া পেজের জন্য প্রয়োজনে অর্থ নিক ফেসবুক। বাকিরা যেমন করে। এ নিয়ে সদর্থক কোনও ইঙ্গিত এখনও মেলেনি।

জুকেরবার্গের ক্ষমা চাওয়ার পরেও বরফ গলছে না। নেটিজেনদের অনেকেই জানতে চাইছেন, সমালোচকদের সঙ্গে কি কোথাও, কোনও ভাবে যোগাযোগ করেছে ফেসবুক? ইতিবাচক উত্তর নেই। উল্টে তথ্য ফাঁসের খবর করায় ব্রিটেনের এক সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে জুকেরবার্গের সংস্থা মামলার হুমকি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, এ সবেরই হিসেব নিতে ঘুঁটি সাজাচ্ছে কংগ্রেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE