সঠিক ভবিষ্যদ্বাণী করে খবরের শিরোনামে নেট।
২০০৮, ২০১২-র পর ২০১৬। পর পর তিন বার। হিসাব মিলিয়ে তিনি এখন অন্যতম সেরা সেলিব্রিটি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে প্রথম থেকে যখন বেশির ভাগ ‘ভোট জ্যোতিষী’র ভোট পাচ্ছিলেন প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি, তখন একমাত্র তিনিই ক্রমাগত বলে আসছিলেন, জেতার সম্ভাবনা বেশি ট্রাম্পেরই। সোমবার শেষ দফা প্রচারের পরেও হিলারির দিকেই ঝুঁকেছিল তামাম মার্কিন মিডিয়াকুল। ব্যতিক্রম তিনি, নেট সিলভার। রীতিমতো অঙ্ক কষে তিনি দেখিয়েছিলেন, হিলারি নয়, আসছেন ট্রাম্পই। শেষ পর্যন্ত যাবতীয় বিতর্ক পিছনে ফেলে বাজিমাত করলেন ট্রাম্প। এবং ট্রাম্পের সঙ্গে বাকি সব ভবিষ্যদ্বাণীকে মিথ্যা প্রমাণ করে জিতলেন সিলভার।
বছর আটেক আগে ২০০৮ সালে তাঁর ডেটা অ্যানালিস্ট সংস্থা ৫৩৮ শুরু করেন নেট। মেজর লিগ বেসবলের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য তাঁর সেবারমেট্রিক্স পদ্ধতি তখন বেশ জনপ্রিয়। এই সময় ২০০৮ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫০টি আসনের ফলাফল একেবারে ঠিক ভাবে মিলিয়ে দিয়ে প্রচারে আসেন তিনি। এই আসনগুলির ফলাফল বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞই ভুল অনুমান করেছিলেন। ব্যতিক্রম সিলভার। ৫৩৮ শুরুর পরের বছরই ‘টাইম’-এর বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জনের তালিকায় ঢুকে পড়েন তিনি। পরের পর্বে, ২০১২ সালে যখন অনেকেই ওবামার দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে মিট রোমনির দিকে ঝুঁকছিলেন, তখনও ওবামাকেই প্রেসিডেন্ট পদে দেখেছিলেন সিলভার।
কিন্তু এই দু’বারই কিছু অ্যানালিস্টকে পাশে পেয়েছিলেন সিলভার। ব্যতিক্রম এ বারের নির্বাচন। নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে শুরু করে প্রথম সারির সব মার্কিন অ্যানালিস্টের মত ছিল, বিপুল ভাবে ক্ষমতায় আসছেন হিলারি। এফবিআই তদন্তে সেই ‘বিপুল’ কিছুটা কমলেও, তাঁকে ভাবী প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রায় বরণ করেই নিয়েছিলেন ‘ভোট জ্যোতিষী’রা। একেবারে গোড়া থেকে ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলিনা এবং নেভাদাকে ট্রাম্পের দিকে রেখেছিলেন সিলভার। শেষ দিকে এক বার ক্লিন্টনকে এগিয়ে রাখলেও বেশির ভাগ সমীক্ষায় রিপাবলিকান ট্রাম্পকেই এগিয়ে রেখেছিল ৫৩৮। অন্য দিকে, এই তিনটি রাজ্যে হিলারিকে জিতিয়েই দিয়েছিলেন বাকি সমীক্ষকেরা। ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে নেভাডা না পেলেও বাকি দু’টি রাজ্যেই জিতেছেন ট্রাম্প। এমনকী, ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের প্রাপ্য ভোটের পরিমাণও প্রায় মিলিয়ে দিয়েছেন সিলভার।
তবে সিলভারের এই অসাধারণ ভবিষ্যদ্বাণীর বিপরীত মতও আছে। সেই মত অনুযায়ী, সিলভার কখনওই ভুল হতে পারেন না। কারণ, চার বার সমীক্ষা করে দু’বার ট্রাম্প এবং দু’বার হিলারিকে প্রেসিডেন্টের হট সিটে বসিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের দাবি, প্রথম দিকে যখন কেউই ট্রাম্পের দিকে ছিলেন না, তখন সিলভার তাঁর দিকে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু একেবারে শেষে মত পাল্টে এগিয়ে রেখেছিলেন হিলারিকেই। ফলে যিনিই জিততেন, সিলভারের সমীক্ষা মিলতই।
তবে যে যা-ই বলুক, পর পর তিন বার ভবিষ্যদ্বাণী সফল করে ট্রাম্পের পরেই আপাতত সবচেয়ে চর্চিত নাম নেট সিলভার!
আরও পড়ুন:
রাজনীতির চেনা ছকের পরোয়া না করেও ট্রাম্পের বাজিমাত
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy