জেল থেকেই ফের পাক সেনা সর্বাধিনায়ক ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে নিশানা করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। মুনিরকে ‘মানসিক ভাবে অসুস্থ’ বলে আক্রমণ করলেন তিনি। পাশাপাশি, আফগানিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে ইন্ধন জোগানোরও অভিযোগ তুললেন মুনিরের বিরুদ্ধে।
শাহবাজ় শরিফ সরকারের থেকে ‘বিশেষ অনুমতি’ পাওয়ার এক মাসেরও বেশি সময় পর অবশেষে মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে কারাবন্দি ইমরানের সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁর বোন উজ়মা খানুম। পরদিন তিনিই সমাজমাধ্যমে ইমরানের এই বার্তা পোস্ট করেন। প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর উর্দুতে লেখা ওই বার্তা ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে মুনিরকে নিশানা করে ইমরান বলেছেন, ‘‘ওঁর নীতি পাকিস্তানের জন্য বিপর্যয়কর। ইচ্ছাকৃত ভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা উস্কে দিচ্ছেন তিনি। তাঁর নীতির কারণেই আজ সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে, যা আমাকে গভীর ভাবে ব্যথিত করে।’’
ইমরানের আরও দাবি, পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থ নিয়ে মুনিরের কোনও উদ্বেগ নেই। শুধুমাত্র পশ্চিমি শক্তিগুলিকে খুশি করতে নানা পদক্ষেপ করছেন তিনি। নাম না-করে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) বিদ্রোহীদের দমনে ড্রোন হানার নিন্দাও করেছেন ইমরান। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দেশবাসীদের উপর ড্রোন হামলা এবং সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করি। কারণ, এটি সন্ত্রাসবাদকে আরও ইন্ধন জোগাবে। মুনির মানসিক ভাবে অসুস্থ একজন মানুষ। তাঁর নৈতিক দেউলিয়াপনার জন্যই পাকিস্তানে সংবিধান এবং আইনের শাসন সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।’’
আরও পড়ুন:
ইমরানের দাবি, মুনিরের নির্দেশেই তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। জেলে চরম মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হতে হচ্ছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে সম্পূর্ণ নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। গত চার সপ্তাহ ধরে কোনও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। আমাকে বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। এমনকি, জেলের নিয়মাবলি অনুযায়ী যা যা মৌলিক সুবিধা আমার প্রাপ্য, সেগুলিও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’’ শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ, উচ্চ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজনৈতিক সতীর্থ থেকে শুরু করে পরিবার— কারও সঙ্গেই দেখাসাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না ইমরানকে।
দাদার সঙ্গে দেখা করার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন উজ়মাও। তিনি জানান, ইমরান এখন শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু তাঁকে নির্জন কারাগারে বন্দি করে রেখে তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। মুনিরকে নিশানা করে উজ়মাও বলেন, ‘‘সব কিছুর জন্য উনিই দায়ী।’’