Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Mike Pompeo

এলএসি-তে চিনা ফৌজ নিয়ে উদ্বিগ্ন মার্কিন বিদেশসচিব, বেজিংয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জোটের সওয়াল

আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েনের অভিযোগ, গায়ের জোরে এলএসি-র দখল নিতে চাইছে চিন।

মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও— ফাইল চিত্র।

মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও— ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০ ১৫:০৬
Share: Save:

ভারত সীমান্তে চিনা ফৌজের তৎপরতা নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকা। মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) ৬০ হাজার চিনা সেনার উপস্থিতির কথা জানিয়ে বেজিংয়ের ‘আগ্রাসন’ নিয়ে সরব হলেন। অন্য দিকে, আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েনের স্পষ্ট অভিযোগ, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে শান্তি স্থাপনের সদিচ্ছা চিনের নেই। তাদের উদ্দেশ্য, গায়ের জোরে এলএসি সংলগ্ন এলাকা দখল করা।’’

ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত ‘কোয়াড’ গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে গত মঙ্গলবার টোকিও গিয়েছিলেন পম্পেও। সরকারি সূত্রের খবর, সেখানে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর কথা হয়। পাশাপাশি, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং দক্ষিণ চিন সাগরে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র সাম্প্রতিক আগ্রাসী আচরণ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।

টোকিও থেকে ফিরে শুক্রবার একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পম্পেও বলেন, ‘‘বিশ্বের চারটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক এবং অর্থনৈতিক শক্তির দেশকে নিয়ে ‘কোয়াড’ গঠিত হয়েছে। আর আমাদের সকলের কাছেই চিনা কমিউনিস্ট পার্টির আচরণ ক্রমশ বিপদ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে লাদাখের পাশাপাশি দক্ষিণ চিন সাগরে চিনা নৌবাহিনীর আগ্রাসনের ‘বিপদ’ সম্পর্কে সরব হয়েছিলেন পম্পেও। বলেছিলেন, ‘‘দক্ষিণ চিন সাগর চিনের উপকূলীয় সাম্রাজ্য নয়। বেজিং যদি এ ভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে থাকে এবং স্বাধীন দেশগুলি সে ব্যাপারে কিছুই না করে, ইতিহাস সাক্ষী চিনা কমিউনিস্ট পার্টি আরও অনেক অঞ্চল দখল করে নেবে।’’

সাক্ষাৎকারে মার্কিন বিদেশসচিব বলেন, ‘‘এখন সকলেই জেনে গিয়েছেন, কী ভাবে ভারতের উত্তরে হিমালয় ঘেরা সীমান্তে চিন শারীরিক সঙ্ঘাতে লিপ্ত হয়েছে। ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। ভাইরাসের (করোনা) উৎপত্তি ও ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। পরিণামে তাদেরও চিনা কমিউনিস্ট পার্টির হুমকি ও নিগ্রহের মুখে পড়তে হয়েছে।’’

এই পরিস্থিতিতে চিনের মোকাবিলায় ‘কোয়াড’-এর দেশগুলির মধ্যো সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়ানোর কথা বলেন পম্পেও। জয়শঙ্করের সঙ্গে তাঁর বৈঠককে ‘ফলপ্রসূ’ জানিয়ে মার্কিন বিদেশসচিবের মন্তব্য, ‘‘এই যুদ্ধে আমেরিকাকে প্রয়োজন হবে সহযোগীদের। আমরাও তাদের পাশেই থাকব।’’ চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ‘খারাপ আচরণ’কে দীর্ঘ দিন ধরে পশ্চিমী দুনিয়া উপেক্ষা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ব এখন জেগে উঠছে। আমেরিকা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে চিন বিরোধী জোট গঠনের কাজ শুরু করেছে।’’

আরও পড়ুন: চিনের সাহায্যে অধিকৃত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি বানাচ্ছে পাকিস্তান

আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্টের দাবি, ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান করিডোর’ কর্মসূচিতে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি চিন। এখন তারা গায়ের জোরে এলএসি-র দখল নিতে চাইছে। আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একদলীয় চিনের শাসকগোষ্ঠী বরাবরই নিরুৎসাহী বলেও তাঁর অভিযোগ। রবার্টের কথায়, ‘‘আমরা অনেক বারই আলোচনার টেবিলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি এবং ব্যর্থ হয়েছি।’’

আরও পড়ুন: রাডার বিধ্বংসী ‘রুদ্রম-১’ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ডিআরডিও-র

রবার্টের মতে, আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলির নাগরিকদের রক্ষা করতে এ বার চিনকে মোকাবিলা করার সময় এসেছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমেরিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার একবিংশ শতকের ভারত।’’ ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া-সহ কয়েকটি দেশের তরফে সম্প্রতি সাইবার নিরাপত্তার স্বার্থে চিনা টেলিকম সংস্থা হুয়েইয়ের উপর বিধিনিষেধ জারির পদক্ষেপকেও ‘সঠিক’ বলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE