Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
village

Mitholz Village: মাটির নীচে অস্ত্রভাণ্ডার, হাজার হাজার টন বিস্ফোরক! যে কোনও দিন মুছে যাবে গোটা গ্রাম

এই গ্রামের প্রতিটি ঘরের প্রতিটি মানুষের কপালে কিন্তু সারা ক্ষণই দুশ্চিন্তার ভাঁজ। প্রতি মুহূর্ত মৃত্যুর হাতছানিকে সঙ্গে করেই বাস তাঁদের।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২১ ১৩:৪৪
Share: Save:
০১ ১৯
সুইৎজারল্যান্ডের কিনডের উপত্যকা। মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। মাথার উপর উজ্জ্বল আকাশ, চারপাশে গগনভেদী পাহাড় আর মাঝে ছোট গ্রাম মিতহোলজৎ।

সুইৎজারল্যান্ডের কিনডের উপত্যকা। মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। মাথার উপর উজ্জ্বল আকাশ, চারপাশে গগনভেদী পাহাড় আর মাঝে ছোট গ্রাম মিতহোলজৎ।

০২ ১৯
মাত্র ১৭০টি পরিবারের বাস এই পাহাড়ি গ্রামে। প্রতিটি বাড়ি একই আদলে তৈরি। একতলায় গবাদি পশুর ঘর আর দোতলায় নিজেদের থাকার জায়গা। আল্পস পর্বতমালার পাদদেশে প্রায় সব গ্রামেই এই কায়দায় গড়ে উঠেছে ঘর-বাড়ি।

মাত্র ১৭০টি পরিবারের বাস এই পাহাড়ি গ্রামে। প্রতিটি বাড়ি একই আদলে তৈরি। একতলায় গবাদি পশুর ঘর আর দোতলায় নিজেদের থাকার জায়গা। আল্পস পর্বতমালার পাদদেশে প্রায় সব গ্রামেই এই কায়দায় গড়ে উঠেছে ঘর-বাড়ি।

০৩ ১৯
নিজেদের ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে সমস্ত দুশ্চিন্তা দূর করতে পর্যটকদের জন্য আদর্শ ঠিকানা হতে পারে এই গ্রাম। এই গ্রামের প্রতিটি ঘরের প্রতিটি মানুষের কপালে কিন্তু সারা ক্ষণই দুশ্চিন্তার ভাঁজ। প্রতি মুহূর্ত মৃত্যুর হাতছানিকে সঙ্গে করেই বাস তাঁদের। ৭৪ বছর আগে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ইতিহাস আজও পিছু ছাড়েনি গ্রামবাসীদের।

নিজেদের ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে সমস্ত দুশ্চিন্তা দূর করতে পর্যটকদের জন্য আদর্শ ঠিকানা হতে পারে এই গ্রাম। এই গ্রামের প্রতিটি ঘরের প্রতিটি মানুষের কপালে কিন্তু সারা ক্ষণই দুশ্চিন্তার ভাঁজ। প্রতি মুহূর্ত মৃত্যুর হাতছানিকে সঙ্গে করেই বাস তাঁদের। ৭৪ বছর আগে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ইতিহাস আজও পিছু ছাড়েনি গ্রামবাসীদের।

০৪ ১৯
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুইস সেনাদের অস্ত্রভাণ্ডার ছিল এই পাহাড়ি গ্রাম। মাটির তলায় গোপনে তাঁরা এই অস্ত্রভাণ্ডার পরিচালনা করত। তাতে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সুইস সেনাদের অস্ত্রভাণ্ডার ছিল এই পাহাড়ি গ্রাম। মাটির তলায় গোপনে তাঁরা এই অস্ত্রভাণ্ডার পরিচালনা করত। তাতে মজুত ছিল প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক।

০৫ ১৯
১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলে। গোলা-বারুদের রমরমা দেখেই দিন কাটিয়েছেন এই এলাকার বাসিন্দারা।

১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলে। গোলা-বারুদের রমরমা দেখেই দিন কাটিয়েছেন এই এলাকার বাসিন্দারা।

০৬ ১৯
১৯৪৫ সালে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা হলে বাসিন্দারা ভেবেছিলেন আর কোনও বিস্ফোরণ, গোলাগুলির সম্মুখীন হতে হবে না তাঁদের।

১৯৪৫ সালে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা হলে বাসিন্দারা ভেবেছিলেন আর কোনও বিস্ফোরণ, গোলাগুলির সম্মুখীন হতে হবে না তাঁদের।

০৭ ১৯
দু’বছর পর দুঃস্বপ্নের রাত ফের ফিরে আসে তাঁদের জীবনে। সেটা ১৯৪৭ সাল। গভীর রাতে আচমকা কেঁপে ওঠে গোটা গ্রাম।

দু’বছর পর দুঃস্বপ্নের রাত ফের ফিরে আসে তাঁদের জীবনে। সেটা ১৯৪৭ সাল। গভীর রাতে আচমকা কেঁপে ওঠে গোটা গ্রাম।

০৮ ১৯
গ্রামবাসীরা মনে করেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে যে দৃশ্য তাঁরা দেখেছিলেন তা আজও চোখের সামনে বিভীষিকা তৈরি করে।

গ্রামবাসীরা মনে করেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে যে দৃশ্য তাঁরা দেখেছিলেন তা আজও চোখের সামনে বিভীষিকা তৈরি করে।

০৯ ১৯
চারদিক দাউ দাউ করে জ্বলছিল। প্রাণে বাঁচার মরিয়া চেষ্টায় হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল বাসিন্দাদের মধ্যে।

চারদিক দাউ দাউ করে জ্বলছিল। প্রাণে বাঁচার মরিয়া চেষ্টায় হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল বাসিন্দাদের মধ্যে।

১০ ১৯
এক রাতের মধ্যেই পুরো গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছিলেন, জখমের সংখ্যাও ছিল অসংখ্য। এই গ্রামের এমন কোনও ঘর অবশিষ্ট ছিল না যা আগুনের গ্রাস থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

এক রাতের মধ্যেই পুরো গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছিলেন, জখমের সংখ্যাও ছিল অসংখ্য। এই গ্রামের এমন কোনও ঘর অবশিষ্ট ছিল না যা আগুনের গ্রাস থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

১১ ১৯
পরে জানা যায়, অস্ত্রভাণ্ডারে মজুত বিস্ফোরকে বিস্ফোরণেই এই পরিণতি হয়েছিল। রাতারাতি গোটা গ্রাম প্রায় জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, সাত হাজার টন বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটেছিল সে দিন।

পরে জানা যায়, অস্ত্রভাণ্ডারে মজুত বিস্ফোরকে বিস্ফোরণেই এই পরিণতি হয়েছিল। রাতারাতি গোটা গ্রাম প্রায় জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, সাত হাজার টন বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটেছিল সে দিন।

১২ ১৯
এর পরের বছর ১৯৪৮ সালে সুইস সরকার এই গ্রামকে নিরাপদ ঘোষণা করে এবং ফের বসতি গড়ে তোলার সবুজ সঙ্কেত দেয়।

এর পরের বছর ১৯৪৮ সালে সুইস সরকার এই গ্রামকে নিরাপদ ঘোষণা করে এবং ফের বসতি গড়ে তোলার সবুজ সঙ্কেত দেয়।

১৩ ১৯
একে একে বাসিন্দারা গ্রামে ফিরে আসেন। ফের নতুন করে বাড়ি বানিয়ে নেন ওই গ্রামে।

একে একে বাসিন্দারা গ্রামে ফিরে আসেন। ফের নতুন করে বাড়ি বানিয়ে নেন ওই গ্রামে।

১৪ ১৯
আর কোনও বিপদ আসবে না এ বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন। সুইস সরকারের থেকেও তেমনই আশ্বাস মিলেছিল। তাই অনেকেই সঞ্চয়ের অনেকটা খরচ করে স্বপ্নের বাড়ি বানিয়েছিলেন।

আর কোনও বিপদ আসবে না এ বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন। সুইস সরকারের থেকেও তেমনই আশ্বাস মিলেছিল। তাই অনেকেই সঞ্চয়ের অনেকটা খরচ করে স্বপ্নের বাড়ি বানিয়েছিলেন।

১৫ ১৯
২০১৮ সালে সুইস সরকার এই গ্রামে ফের প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরকের হদিশ পায়।

২০১৮ সালে সুইস সরকার এই গ্রামে ফের প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরকের হদিশ পায়।

১৬ ১৯
এখনও সাড়ে তিন হাজার টন বিস্ফোরক রয়েছে গোপন অস্ত্রভাণ্ডারে। এমনই জানিয়েছে সুইস সরকার। গ্রাম খালি করে বিস্ফোরক অন্যত্র সরিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করার কথাও ওই সময়ে ঘোষণা করে দেয় সরকার।

এখনও সাড়ে তিন হাজার টন বিস্ফোরক রয়েছে গোপন অস্ত্রভাণ্ডারে। এমনই জানিয়েছে সুইস সরকার। গ্রাম খালি করে বিস্ফোরক অন্যত্র সরিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করার কথাও ওই সময়ে ঘোষণা করে দেয় সরকার।

১৭ ১৯
তা না করলে যে কোনও দিন ফের আর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠতে পারে গোটা গ্রাম। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভিটে ছাড়তে নারাজ গ্রামবাসীদের একাংশ।

তা না করলে যে কোনও দিন ফের আর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠতে পারে গোটা গ্রাম। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভিটে ছাড়তে নারাজ গ্রামবাসীদের একাংশ।

১৮ ১৯
সুইস সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ১০ বছর লাগবে ওই পরিমাণ বিস্ফোরক নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে। আর এই ১০ বছর গ্রামবাসীদের ভিটেছাড়া হয়েই কাটাতে হবে।

সুইস সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ১০ বছর লাগবে ওই পরিমাণ বিস্ফোরক নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে। আর এই ১০ বছর গ্রামবাসীদের ভিটেছাড়া হয়েই কাটাতে হবে।

১৯ ১৯
এর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতেও রাজি সুইস সরকার। কিন্তু রাজি হননি গ্রামবাসীদের একাংশ। বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে তাই ভিটে আগলে গ্রামেই পড়ে রয়েছেন তাঁরা।

এর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতেও রাজি সুইস সরকার। কিন্তু রাজি হননি গ্রামবাসীদের একাংশ। বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে তাই ভিটে আগলে গ্রামেই পড়ে রয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE