Advertisement
E-Paper

ত্রাণের গাড়ি দেখে ঝাঁপালেন ক্ষুধার্তেরা, সামলাতে নির্বিচারে গুলি ইজ়রায়েলি সেনার! গাজ়ায় নিহত বহু, বাড়ছে হাহাকার

গত মার্চ মাস থেকে গাজ়ায় ত্রাণ আটকে রেখেছে ইজ়রায়েল। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের পাঠানো খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য ত্রাণসামগ্রীবাহী গা়ড়ি সীমান্তে আটকে দেওয়া হচ্ছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ১৪:০৪
গাজ়ায় ত্রাণের গাড়ির সামনে ক্ষুধার্তদের হাহাকার।

গাজ়ায় ত্রাণের গাড়ির সামনে ক্ষুধার্তদের হাহাকার। ছবি: রয়টার্স।

ক্ষুধা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হচ্ছে গাজ়ায়। আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে ত্রাণ প্রবেশের দরজা খুলে দিয়েছে ইজ়রায়েল। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। অভিযোগ, ক্ষুধার্তদের ভিড় সামাল দিতে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। রবিবার তাতে অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, দাবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জ়াজিরার। গাজ়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের দাবি, এখনও ত্রাণবাহী অন্তত ২২ হাজার ট্রাক গাজ়া স্ট্রিপের বাইরে সীমান্তে আটকে রয়েছে। শনিবার গাজ়ায় প্রবেশ করেছে ৩৬টি ট্রাক। ইজ়রায়েলি বাহিনীর গুলিতে এক দিনে ৯২ জন প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ৫৬ জন ত্রাণের জন্য ক্ষুধার্তদের ভিড়ে ছিলেন।

গত মার্চ মাস থেকে গাজ়ায় ত্রাণ আটকে রেখেছে ইজ়রায়েল। রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের পাঠানো খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য ত্রাণসামগ্রীবাহী গা়ড়ি সীমান্তে আটকে দেওয়া হচ্ছে। ফলে গাজ়ায় খাদ্যের হাহাকার পড়ে গিয়েছে। গত কয়েক মাসে সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দাবি। যদিও ইজ়রায়েল দুর্ভিক্ষের কথা মানতে চায়নি। গাজ়ার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, সেখানে অচিরেই লক্ষ লক্ষ শিশু অপুষ্টি এবং অনাহারে মারা যাবে। মানবিক স্বার্থে তাই অবিলম্বে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সমালোচনার মাঝে বিধিনিষেধ শিথিল করেছে ইজ়রায়েল। ধীরে ধীরে ত্রাণ প্রবেশের পথ খোলা হয়েছে।

রবিবার তেমনই ত্রাণবাহী কিছু গাড়ি গাজ়ায় ঢুকছিল। সংবাদমাধ্যমে দাবি, খাবার দেখে ক্ষুধার্তেরা গাড়ির দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। রাস্তায় কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। ফলে ত্রাণের গাড়ি নির্দিষ্ট এলাকায় পৌঁছোতে পারেনি। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ইজ়রায়েলি সেনা নির্বিচারে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। তাতে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়।

অভিযোগ, গত পাঁচ মাস ধরে গাজ়ায় জ্বালানির জোগান বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতাল-সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে জ্বালানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার দু’টি জ্বালানির ট্রাক গাজ়ায় ঢোকে। তাতে মোট ১০৮ টন জ্বালানি ছিল। ট্রাক দু’টি মিশর হয়ে গাজ়ায় ঢুকেছে ইজ়রায়েল নিয়ন্ত্রিত কারেম আবু সালেম ক্রসিং হয়ে। রাষ্ট্রপুঞ্জের পাঠানো আরও চারটি জ্বালানিবাহী ট্রাক চলতি সপ্তাহে গাজ়ায় প্রবেশের কথা। হাসপাতাল, বেকারি এবং লঙ্গরখানা সচল রাখার জন্য এই জ্বালানি অত্যন্ত প্রয়োজন। যদিও কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, গাজ়ায় যা চাহিদা, তা মেটাতে দিনে এখন ৬০০টি করে জ্বালানির ট্রাক প্রয়োজন।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজ়ায় জ্বালানি আটকানোয় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালগুলি। যুদ্ধদীর্ণ এলাকায় হাসপাতাল অত্যন্ত জরুরি। জ্বালানি এবং ত্রাণের অভাবে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, গুরুতর অসুস্থ বা জখম রোগী ছাড়া বাকিদের পরিষেবাই দিতে পারছেন না চিকিৎসকেরা।

২০২৩ সাল থেকে ইজ়রায়েলে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল ইজ়রায়েল। হামাস ইজ়রায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি না দিলে গাজ়ায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। চাপের মুখে কিছু দিন আগে ইজ়রায়েলি সেনা জানায়, গাজ়ার কিছু অংশে দিনে ১০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি পালন করা হবে এবং ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে। বেশ কিছু এলাকাকে ‘নিরাপদ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। সেখানে প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কোনও হামলা হবে না। কিন্তু তার পরেও ক্ষুধার্তদের হাহাকার জারি।

gaza food crisis Israel Hamas War Israel Palestine Conflict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy