Advertisement
E-Paper

৪২ বছর পর কবর খুঁড়ে দেখলেন সমাধিস্থই হয়নি শিশু!

গ্যারির কফিন খুলে বিশেষজ্ঞরা দেখলেন, সেখানে শিশুর খেলনা থেকে পোশাকের টুকরো সবই রয়েছে, নেই কেবল কোনও মানব শরীরের দেহাংশ!

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৭:০৯
গ্যারির সমাধিফলক। ছবি: সংগৃহীত।

গ্যারির সমাধিফলক। ছবি: সংগৃহীত।

সময়টা প্রায় সাড়ে চার দশক। এই এতগুলো বছরে এমন একটাও সপ্তাহ কাটেনি যে সপ্তাহে লিডিয়া রিড তাঁর সন্তানের কবরের কাছে যাননি। সেই ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতি সপ্তাহে একগোছা ফুল রেখে আসতেন গ্যারির কবরের উপর। মৃত সন্তানের স্মৃতিতে বিলাপ করতেন। দৃশ্যটা হঠাত্ পাল্টে গেল গত মাসে। যখন গ্যারির কফিন খুলে বিশেষজ্ঞরা দেখলেন, সেখানে শিশুর খেলনা থেকে পোশাকের টুকরো সবই রয়েছে, নেই কেবল কোনও মানব শরীরের দেহাংশ!

স্কটল্যান্ডের এডিনবরার বাসিন্দা ৬৮ বছরের লিডিয়া রিড এখন দুই সন্তানের মা। সালটা ১৯৭৫। ২৬ বছরের রিড তখন ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। হঠাত্ই প্রসববেদনা ওঠায় তাঁকে ভর্তি করানো হয় স্থানীয় হাসপাতালে। দেরি না করে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিত্সকেরা। রিডকে বলা হয়, গ্যারির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। দিন কয়েক পরে রিডকে ছেড়ে দেওয়া হলেও গ্যারিকে রাখা হয় লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে। রিডের অভিযোগ, নিজের সন্তানকে ভাল করে দেখতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি তাঁকে। এর পরেই রিডকে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, গ্যারির শরীরের বেশির ভাগ অঙ্গই কোনও কাজ করছে না। রিড অনুমতি দিলে খুলে দেওয়া হবে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম।

আরও পড়ুন: সমুদ্রের তলায় আস্ত ‘শহর’ তৈরি করল অক্টোপাসরা!

ভগ্ন হৃদয়ে অনুমতি দেন রিড। এর পরেই শুরু হয় সেই রহস্যময় পর্ব। রিডের দাবি, গ্যারি ছিল ফর্সা এবং তার মাথায় খুবই কম চুল ছিল। কিন্তু যে শিশুকে কফিনে রাখা হয়, তার মাথা ভর্তি চুল ছিল। এমনকী সে ফর্সাও ছিল না তেমন। রিড প্রতিবাদ করেন। তাঁকে বোঝানো হয়, সন্তান হারানোর দুঃখে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাই ভুল দেখছেন। মেনে নেন রিড। নিজের হাতে বয়ে নিয়ে যান সন্তানের কফিন। তখনও কেমন যেন সন্দেহ হয়। কফিন এত হালকা কেন! তখনও তাঁকে বোঝানো হয় তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের কথা।

এর পর থেকে প্রতি সপ্তাহে মৃত সন্তানের সমাধিতে ফুল রেখে যান তিনি। ১৯৯৯ সালে সামনে আসে স্কটল্যান্ডে শিশু অঙ্গ পাচারের বিশাল এক চক্রের। এদের সঙ্গে বেশ কিছু হাসপাতালের যোগসাজশের প্রমাণ মেলে। সন্দেহ হওয়ায় রিড এবং আরও এক জন যোগাযোগ করেন হাসপাতালের সঙ্গে। সেখান থেকে তাঁদের জানানো হয়, তেমন কোনও ঘটনা তাঁদের শিশুদের সঙ্গে ঘটেনি। নিশ্চিত হতে পারেননি রিড। একের পর এক হাসপাতালের সঙ্গে পাচার চক্রের নাম জড়িয়ে পড়ায় রিড আবেদন করেন গ্যারির কফিন পরীক্ষার। অবশেষে সেই আবেদনে সাড়া দেয় আদালত। দিন কয়েক আগে কফিন তুলে পরীক্ষা করে হতবাক হয়ে যান রিড।

তবে কি গ্যারি জীবিত? উত্তর নেই কারও কাছে। রিডের মতো অসংখ্য মায়ের এখন প্রশ্ন, আদৌ কি তাঁদের সন্তানরা মারা গিয়েছিল? কি হয়েছিল তাদের সঙ্গে? উত্তরের খোঁজে এখন আদালতের দিকে তাকিয়ে রিডের মতো অসংখ্য মা।

Grave Coffin Human Trafficking
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy