আপাতদৃষ্টিতে বেশ শান্তই ওই প্রৌঢ়। বারস্টল শহরে একাই থাকতেন। পাড়ায় তেমন মেলামেশাও করতেন না। শুধু নিজের মনে বাগান দেখাশোনা করতেন তিনি। কিন্তু গত কালের ঘটনার পর আর কিছু মেলাতে পারছেন না টমি মেয়ারের পড়শিরা।
কারণ পুলিশের দাবি, এই ৫২ বছর বয়সি টমির হাতেই খুন হয়েছেন ব্রিটিশ এমপি জো কক্স। গত তিন মাস ধরে জো হুমকি মেসেজ পাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা। ফলে তাঁর নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছিল।
এক প্রচার অভিযান থেকে বৃহস্পতিবারই পশ্চিম ইয়র্কশায়ারে নিজের কেন্দ্র ব্যাটলে অ্যান্ড স্পেনে ফিরেছিলেন জো। দুপুরে বারস্টলের মার্কেট স্ট্রিটে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার সময় জো-কে পর পর দু’বার গুলি করা হয়। এর পর জো মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকে লাথি মেরে ছুরি দিয়ে বারবার কোপায় আততায়ী। ঘটনার পরেই গুরুতর আহত অবস্থায় জো-কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা নাগাদ মৃত বলে ঘোষণা করা হয় তাঁকে। জো-খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে টমিকে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, টমি নব্য নাৎসি সংগঠন ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স-এর সমর্থক। এই সংগঠনের জন্ম আমেরিকায়। তবে ব্রিটেনের নব্য নাৎসি ও ‘শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী’ সংগঠনগুলির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ গভীর। কক্সের হত্যাকাণ্ডে নব্য নাৎসিদের কোনও চক্রের হাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এক মার্কিন সংগঠনের দাবি, টমি মেয়ার আমেরিকার নব্য নাৎসিদের কাছ থেকে বেশ কিছু বইপত্র জোগাড় করেছিলেন। তাতে বন্দুক ও বিস্ফোরক তৈরির নীল নকশা রয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই
বলে দাবি করেছে ‘শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী’ বলে পরিচিত ব্রিটেনের ন্যাশনালিস্ট পার্টি। টমির ভাইয়ের দাবি, তাঁর দাদার মানসিক রোগ ছিল।
জো-র হত্যার পরে হাত মিলিয়ে চলার বার্তা দিয়েছে কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টি। প্রায় নজিরবিহীন ভাবে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও লেবার নেতা জেরেমি করবিন। জো-র কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনে কোনও প্রার্থীও দেবে না কনজারভেটিভ পার্টি। জো-র স্বামী ব্রেন্ডনের অনুরোধ, ‘‘এই হত্যার মূলে যে ঘৃণা, আসুন তাকেই শেষ করে ফেলি।’’