আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ। শনিবার রাতে এমনই ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তাল বাংলাদেশ। শুক্রবার থেকে শাহবাগে এই দাবিতে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সেই আবহে আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তিকালীন সরকার আগেই জানিয়েছিল, তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দেখছে। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ হওয়ার কথা জানান। তাঁর কথায়, ‘‘শনিবারের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে।’’ সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনও রাজনৈতিক দল বা তার সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে। সেই কথা উল্লেখ করে একটি বিবৃতিও জারি করে ইউনূসের সরকার।
ইউনূসের সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, বাংলাদেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে গত বছর শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠতে শুরু করেছিল সে দেশের অন্দরে। আওয়ামী লীগের ছাত্রশাখা বাংলাদেশ ছাত্র লীগকে আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করেছে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এত দিন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তেমন কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হয়নি।
সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে টানা তিন দিন ধরে কর্মসূচি শুরু করে। শুক্রবার থেকে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ নামে একটি কর্মসূচিও শুরু করেছে তারা। সেই আবহেই জরুরি বৈঠকে বসেন ইউনূস। তবে বৈঠকের আগে তিনি আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তার পরেই এই সিদ্ধান্তের খবর প্রকাশ্যে এল।