Advertisement
E-Paper

‘৭ আইএস জঙ্গি বিয়ে করেছিল আমার ১৬ বছরের বোনকে’

ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গিদের ক্যাম্পগুলিতে মহিলাদের ওপর কী ভাবে অত্যাচার চালানো হয় নির্বিচারে, তারই কয়েকটি খণ্ড-চিত্র তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৬ ১৭:২৮

ঘটনা ১: ফরিদার (নাম পরিবর্তিত) বোন যখন সবে ১৬ বছরে পা দিয়েছে, ওরা তখনই তাকে তুলে নিয়ে যায়। ফরিদার বোন খুব সুন্দরী। তাই তাকে সাত-সাত জনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও সিরিয়াতেই রয়েছে ফরিদার বোন। তাকে প্রত্যেক রাতে সাত-সাতটি ‘স্বামী’র শয্যাসঙ্গী হতে হয়। কোনও কোনও রাতে একই সঙ্গে তাকে শয্যাসঙ্গী হতে হয় তিন বা চারটি ‘স্বামী’র। ফরিদার বোনের ইচ্ছে-অনিচ্ছের ওপর কিছুই নির্ভর করে না। তার সাত ‘স্বামী’র যখন যেখানে যেমন ইচ্ছে হবে, ফরিদার বোনকে তখনই সেখানে সেই ‘দাবি’ তেমন ভাবেই মেটাতে হবে। হবেই। ফরিদার কপাল একটু ভাল। সে ওই রোজ রাতের অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পেয়ে সবে ঘরে ফিরতে পেরেছে। তবে ফরিদার অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরে একেবারে উপচে গিয়েছে! ফরিদা চোখের সামনে দেখেছে, একটা লোক পর পর চারটি মেয়েকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করল। একটি মেয়েকে পর পর দু’বার ধর্ষণ করল আধ ঘণ্টার মধ্যেই! আর একটি মেয়েকে ধর্ষণ করল তার ঘুম ভাঙিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে। ফরিদা দেখেছে, মায়ের বুকের দুধ খাওয়া শিশুটিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ওই মেয়েটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল একটি লোক। তার পর আরও তিনটি লোক ঝাঁপিয়ে পড়ল ওই মেয়েটির ওপর। ফরিদার কথায়, ‘‘মেয়েটিকে ছিঁড়ে ওরা (আইএস জঙ্গি) ফালাফালা করে দিল।’’

ঘটনা ২: ফরিদার নিজের গল্পটাও কম মর্মান্তিক নয়। ফরিদাও দেখতে বেশ চটকদার ছিল। গায়ের রং ফেটে পড়ছে। যেমন চোখ, তেমনই তার ‘ক্লিভেজ’। ফরিদাকে এ সবের ‘খেসারত’ দিতে হয়েছে নির্মম ভাবে। ফরিদাকে বিয়ে করতে হয়েছিল পাঁচ জনকে। আইএসের পাঁচ জঙ্গিকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছিল ফরিদাকে। ফরিদার কথায়, ‘‘একেক জন আমাকে কিনেছে। আমাকে নিয়ে যতটা পারে, ফুর্তি করেছে। রাতের পর রাত। আমাকে দিনেও ঘুমোতে দেয়নি ওদের প্রয়োজন মেটাতে। তার পর আমাকে অন্য আরেক জনের কাছে বেচে দিয়েছে। আমার প্রথম ‘স্বামী’র এক বন্ধুর আমাকে দেখে ভাল লেগে গেল। সে আমাকে কিনে নিয়ে গিয়ে আমাকে নিয়ে ক’দিন ধরে খুব ফুর্তি করল। তার পর শখ ফুরোলে আমাকে তার আরেক বন্ধুর কাছে বেচে দিল। এই ভাবে পাঁচ জন আমাকে কিনেছে, চার জন বেচেছে। আমার পাঁচ-পাঁচটা ভাইকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ওরা কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে। কিরকুকে আমার বাড়ি ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। যে ভাবে আমার ভাইদের ওরা খুন করেছে একের পর এক, আমার বাড়ি তছনছ করেছে, তা আমি ১০০ বছরেও ভুলতে পারব না। আমি এখনও কাঁদি ওদের কথা ভেবে। আমার স্বামী এখনও বেঁচে রয়েছে। কিন্তু, তার কাছে মুখ দেখাব কী করে? আমি তো আর কখনওই সুখী করতে পারব না আমার আদত স্বামীকে!

ঘটনা ৩: এ বার লীলার গল্প। লীলাও আইএসের ক্যাম্পে কাটিয়েছে বছরের পর বছর। সুন্দরী মেয়ে, গায়ের রং ফর্সা, ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের মেয়েরা দেখতে-শুনতে যেমন হয় আর কী! লীলার কথায়, ‘‘ওরা শুধু একটা কথাই জানে, মেয়েদের শরীরটাকে লুটেপুটে নিতে হয়। ভোগ করতে হয়। এটা ওরা ইসলামের নামেই করে। মনে করে, বিশ্বাস করে, এটাই জিহাদির আদর্শ। ওরা খায়-দায়, ঘুমোয় ইসলামের নামে। মেয়েদের শরীরটাকে নিয়ে ওরা খেলাধুলোও করে ইসলামের নামেই, বিশ্বাসে! আর এ সব ওরা খুব আন্তরিক ভাবেই করে। কারণ, ওরা মনে করে এটাই ইসলাম ধর্ম। যেখানে মেয়েদের দ্বিতীয় শ্রেণির মানুষ বলে মনে করা হয়। ওরা মনে করে, বিশ্বাস করে, মেয়েদের শরীরটা শুধুই পুরুষদের মনোরঞ্জনের জন্য। ওরা মনে করে, যেনতেন ভাবে একটা যুদ্ধ জেতা, একটা জায়গা হাজারো রক্ত ঝরিয়ে দখল করার মতোই মেয়েদের শরীরটাকে নির্বিচারে ভোগ করাটাও ‘বীরত্ব’। সেটাই ইসলাম ধর্মের বিধান। নির্দেশ। আর সেই ‘নির্দেশ’টা ওরা অক্ষরে অক্ষরে আন্তরিক ভাবেই মেনে চলে। ওরা পাগল। এটা ওদের অসুস্থতাও। ওরা ওদের মা, বোনকেও ইসলাম ধর্মের প্রয়োজনে ভোগ করতে পিছপা হবে না। ওদের ছেলেমেয়েরাও ঠিক ওদেরই মতো হবে। রাক্ষসের বংশ! আমাকে আইএস ক্যাম্পে তিন বছরে ২৭২ জন পুরুষ ব্যবহার করেছে, নির্বিচারে। ওদের যদি আমার সামনে ধরে নিয়ে এসে গলা কেটে দাও, আমার আর যাই হোক, অন্তত কোনও দুঃখ হবে না! ওরা যে আমার জীবনটাকে একেবারে শেষ করে দিয়েছে।’’

ঘটনা ৪: এক আইএস জঙ্গির গল্প। ইরাকে আইএসের একটি ডেরায় ঢুকে এক বিদেশি সাংবাদিক সরাসরি এক জঙ্গিকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘তোমার স্ত্রী ছিল? তার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে?’’ জঙ্গিটি ওই সাংবাদিককে জবাব দিয়েছিল, ‘‘আমার বউয়ের সারা শরীর ঢাকা থাকতো বোরখায়। ওটাই আমাদের ধর্মের বিধান। আমি যখন যেখানে যেতাম, যদি চাইতাম, সেও সেখানে যাবে তখনই সে আমার সঙ্গে সেখানে যেত। যেতেই হবে, ইসলামের বিধান যে!’’ সাংবাদিকের আরও একটি প্রশ্ন ছিল। যার জবাবে ওই জঙ্গিটি বলেছিল, ‘‘হ্যাঁ, আমার স্ত্রীকেও আমি নির্বিচারে ভোগ করতাম। প্রয়োজন হলে, জিহাদির আদর্শ মানতে হলে আমি আমার মাকেও ভোগ করতে দ্বিধা করব না।’’

ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের ক্যাম্পগুলিতে মহিলাদের ওপর যে অত্যাচার, নির্যাতন চলছে বছরের পর বছর ধরে, ওপরের ঘটনাগুলি তারই কয়েকটা খণ্ড-চিত্র।

আরও পড়ুন- এই অফিসে রোজ সকালে বসকে চুমু খাওয়া বাধ্যতামূলক! দেখুন ভিডিও​

ISIS Crimes Against women My Sister is 16, They Married Her To 7 Men ISIS
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy