সামরিক অভ্যুত্থানের চার বছর পরে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে মায়ানমারে। তিন দফায় হবে নির্বাচন। আজ প্রথম দফা।
মায়ানমারে শেষবার নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালে। সে বার বিপুল ভোটে জিতেছিলেন নোবেলজয়ী নেত্রী আউং সান সু চি। কিন্তু তার কয়েক মাস পরেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে জুন্টা সরকার। সু চি-কে প্রথমে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। পরে তাঁকে গ্রেফতার করে কোনও অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। বহু দিন সর্বসমক্ষে আসেননি সু চি। ফলে তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কি না, থাকলেও কেমন আছেন ৮০ বছর বয়সি নেত্রী, সেই আশঙ্কা ক্রমশ দানা বাঁধছে। এ বারের নির্বাচনে সু চি বা তাঁর দলের কাউকে অংশ নিতেদেওয়া হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে এই ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন। তাদের দাবি, এই ভোট সামরিক শাসক তথা জুন্টা সরকারের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার একটা ফন্দি। তবে জুন্টার পাল্টা দাবি, দেশে রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে গত বারের থেকে এ বার ভোট পড়েছে অনেক কম। তবু যাঁরা ভোট দিচ্ছেন, তাঁদের আশা, দেশে স্থিতাবস্থা ফিরবে, নির্বাচিত সরকার এলে অর্থনীতিরও কিছুটা সুরাহা হবে। যেমন ৫১ বছরের খিন মারলার। তিনি বললেন, “গৃহযুদ্ধের জন্য নিজের গ্রাম থেকে পালিয়ে এসে শহরে আশ্রয় নিয়েছি। আশা করি, ভোটের পরে শান্তি ফিরবে, আবার গ্রামে ফিরে যেতে পারব।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এ বার ক্ষমতায় আসবে মায়ানমারের সেনা-সমর্থিত দল ‘ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)’। দেশের বেশ কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা দলের নেতা। ইউএসডিপি ক্ষমতায় এলে এক প্রকারের সামরিক শাসনই বজায় থাকবে দেশে, মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
পরের দুই দফার ভোট ১১ ও ২৫ জানুয়ারি। তিন দফায় দেশের মোট ৩৩০ প্রদেশের মধ্যে ২৬৫তে নির্বাচন হবে। তবে সব ক’টি এলাকা সেনার নিয়ন্ত্রণে নেই। ফলে সে সব জায়গায় ভোট প্রক্রিয়া ঠিকঠাক হবে কি না, তা নিয়ে একটা বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)