নাসা-র মহাকাশচারিণী অ্যান ম্যাকেন। ছবি- রয়টার্স
এ তদন্তে বড়বাবু-মেজবাবুরা চাইলেই ঘটনাস্থলে ছুটে যেতে পারবেন না। এ যে গগন থানার মামলা!
গগন মানে, মহাকাশ। নাসা-র কাছে এই প্রথম জমা পড়েছে একটি অভিযোগ, যে ‘অপরাধ’ মহাকাশে ঘটেছে বলে দাবি। কী রকম? নাসা-র মহাকাশচারিণী অ্যান ম্যাকেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মহাকাশকেন্দ্র থেকে তাঁর পূর্বতন সঙ্গিনী সামার ওয়রডেন-এর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন! অ্যান ফেরার পরে শুরু হয়েছে তদন্ত। আইনজীবীদের কাছে অ্যানের দাবি, তিনি সামারের অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করেছিলেন এ কথা সত্য। কিন্তু তার পিছনে কোনও অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। টাকাপয়সা সব ঠিক আছে কি না, কিছু বিল মেটানোর মতো অর্থ মজুত আছে কি না এবং সামারের সঙ্গে যৌথ ভাবে তিনি যে শিশুকে প্রতিপালন করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তার দেখভালের টাকা অ্যাকাউন্টে রয়েছে কি না, সেটাই দেখে নিতে চাইছিলেন।
সামার পেশায় বায়ুসেনার গোয়েন্দা অফিসার। একা মা। অ্যানের সঙ্গে পরিচয়ের পর ২০১৪ সালে দু’জনের বিয়ে। অ্যান সেনাবাহিনীর পাইলট হিসেবে দীর্ঘদিন ইরাকে ছিলেন। তার পর নাসায় যোগ দেন। গত বছর দু’জনে বিচ্ছেদের মামলা করেছেন। এখন অ্যানের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এনেছেন সামার।
ঘটনা হল, সামারের অভিযোগ সত্যি না কি অ্যানের দাবি সত্যি, সে বিতর্ক ছাড়িয়ে মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অন্য কারণে। কারণ এই প্রথম একটি অভিযোগ এল, যেখানে সম্ভাব্য ‘অপরাধ’টি ঘটানো হয়েছে মহাকাশে! এই মুহূর্তে ৫টি স্পেস স্টেশন রয়েছে সেখানে। আমেরিকা, ইউরোপ, রাশিয়া, জাপান এবং কানাডার। মহাকাশে যার কেন্দ্রে ‘অপরাধ’ সংঘটিত হবে, সেই দেশের আইন মোতাবেক তার বিচার হওয়ার কথা। আবার, মহাকাশে এক দেশের নাগরিক অন্য দেশের নাগরিকের বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটালে, প্রত্যর্পণ আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যায়। কিন্তু এত দিন অবধি সে সব দরকার পড়েনি। অ্যান আর সামার সে দিক থেকে একটি নতুন অধ্যায়ের জন্ম দিলেন বলা চলে। অদূর ভবিষ্যতে মহাকাশ-পর্যটনের রমরমা বাড়লে কী কী হতে পারে, তা নিয়েও এখন থেকেই ভাবনাচিন্তা চলছে। অনেকেরই প্রশ্ন, ঢেঁকি যদি স্বর্গে গিয়ে ধান ভানে, মানুষ কি আর মহাকাশে গিয়ে সুবোধ বালক হয়ে থাকবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy