Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গোষ্ঠী সংঘর্ষ, কার্ফু শ্রীলঙ্কায়

প্রশাসনের দাবি, ফেসবুকে ছড়ানো গুজব থেকেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। গত কাল সিলাবমের বেশ কিছু মসজিদ এবং মুসলিমদের দোকানে হামলা চালিয়েছে উন্মত্ত জনতা।

উন্মত্ত জনতার রোষে কিনিয়ামার একটি মসজিদ। ছবি রয়টার্স।

উন্মত্ত জনতার রোষে কিনিয়ামার একটি মসজিদ। ছবি রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
কলম্বো শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

প্রথমে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ-সহ বেশ কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া সাইট সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হয়েছিল। তার পরে শ্রীলঙ্কার গোটা অংশে রাতে (ন’টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত) সাত ঘণ্টার জন্য জারি করা হল কার্ফুও। গত ২১ এপ্রিল ইস্টার রবিবারের আট বিস্ফোরণে নড়ে গিয়েছিল দেশটা। দু’শোরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছিল বিভিন্ন গির্জা ও পাঁচতারা হোটেলে। তার পর থেকে একটু একটু ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। গত কালই প্রথম শুরু হয়েছিল গির্জায় প্রার্থনা। তার আগের সপ্তাহ থেকে স্কুলগুলোও খুলে গিয়েছিল। ধারাবাহিক বিস্ফোরণের তদন্তও অবশ্য চলছিল পাশাপাশি। তার মধ্যেই হঠাৎ গত কাল ফের তেতে ওঠে পূর্ব উপকূলের খ্রিস্টান-অধ্যুষিত সিলাবম শহর।

প্রশাসনের দাবি, ফেসবুকে ছড়ানো গুজব থেকেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। গত কাল সিলাবমের বেশ কিছু মসজিদ এবং মুসলিমদের দোকানে হামলা চালিয়েছে উন্মত্ত জনতা। এক ব্যক্তিকে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে। ক্রমশ তা গোষ্ঠী সংঘর্ষের চেহারা নেয়। পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৮ বছরের ব্যক্তি আব্দুল হামিদ মহম্মদ হাসমারকে। গন্ডগোল বাধানোর অভিযোগে ওই এলাকার কুরুঙ্গেলা জেলা থেকে আরও বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেনার মুখপাত্র সুমিত আতাপাত্তু বলেছেন, ‘‘বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অধ্যুষিত জেলাগুলি থেকে দাবি ওঠে, ধৃতদের মুক্তি দিতে হবে।’’

শ্রীলঙ্কার মুসলিম কাউন্সিল জানিয়েছে, মসজিদের সঙ্গে মুসলিমদের বেশ কিছু বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে। ইস্টার বিস্ফোরণের পর থেকে মাঝেমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মুসলিমদের নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অন্য সম্প্রদায়গুলির আবার অভিযোগ, সরকারের কাছে সতর্কতা পৌঁছনো সত্ত্বেও ধারাবাহিক বিস্ফোরণ এড়ানো যায়নি। আর তার পরে ওই ঘটনায় যারা জড়িত, সেই সব জঙ্গিকে গ্রেফতারও করা হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, ইস্টার বিস্ফোরণের পরে প্রশাসনের নজরদারি সত্ত্বেও তলে তলে মুসলিম-বিরোধী হাওয়া প্রবল হয়ে উঠেছিল, সেটারই প্রতিফলন ঘটেছে রবিবার। প্রথমে তিন জেলায় কার্ফু জারি করা হয়েছিল। ক্রমশ গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে কলম্বোর উত্তরের বিভিন্ন জেলায়। তখনই সারা দেশে কার্ফু জারির কথা ঘোষণা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে শান্তি বজায় রাখার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে আতঙ্ক ডেকে আনবেন না। ইস্টার বিস্ফোরণে জড়িত জঙ্গিদের ধরতে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সঙ্কট শুরু হলে তদন্তই বাধা পাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sri Lanka Curfew Social Media Mob violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE