ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে কেন কূটনৈতিক লড়াইয়ে ব্যর্থ হতে হচ্ছে, তা নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়লেন নওয়াজ শরিফ।
কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার জন্য পাকিস্তানের পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন ডাকতে উদ্যোগী হয়েছিলেন নওয়াজ। পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, আজ অধিবেশনের শুরুতেই ‘কাশ্মীরে ভারতের আগ্রাসন ও অত্যাচার’ –এর বিরুদ্ধে ‘স্বাধীনতার লড়াই’-এর কথা টেনে আনেন শরিফ। বলেন, বুরহান ওয়ানির মৃত্যু কাশ্মীর পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। শরিফের মন্তব্য, কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব মেনে চলার কথা শক্তিধর দেশগুলির ভেবে দেখা উচিত। উরির প্রসঙ্গ টেনে পাক প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, ‘‘কোনও তদন্ত ছাড়াই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারত এই হামলার দায় পাকিস্তানের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। এ থেকেই তাদের উদ্দেশ্য বোঝা যাচ্ছে।’’ নওয়াজের দাবি, ‘‘ভারতকে আলোচনার টেবিলে বসাতে সব রকম ভাবে চেষ্টা চালিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু দিল্লি এই প্রক্রিয়া সফল হতে দেয়নি।’’ শরিফ জানান, পাকিস্তান যুদ্ধের বিরোধী। আলোচনার মাধ্যমেই যাবতীয় বিষয়ের সমাধান চাইছে ইসলামাবাদ।
কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যও বিরোধীদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। পাকিস্তানের প্রায় সব কটি প্রধান রাজনৈতিক দল কাশ্মীর প্রশ্নে এককাট্টা হলেও প্রধান বিরোধী দল পিপিপি এ দিন নওয়াজ সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়েছে। নওয়াজ সব দিক থেকে ব্যর্থ হয়েছেন— এই অভিযোগ এনে পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশন বয়কট করেছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। তবে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি অধিবেশন দেখতে আজ পার্লামেন্টে উপস্থিত হয়েছিলেন। নওয়াজের বক্তব্য শোনার পরেই পিপিপি-র পক্ষ থেকে বিরোধী দলনেতা খুরশিদ শাহ পাক প্রধানমন্ত্রীকে কূটনৈতিক ব্যর্থতার জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন। ইসলামাবাদে নভেম্বরে প্রস্তাবিত সার্কের বৈঠক ভারতের বয়কট করার প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। বলেন, ‘‘ভারত আমাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সার্কের সম্মেলনে পাঁচটি দেশ আসতে রাজি নয়— এ কথাটা আমরা আগাম জানতেও পারলাম না।’’ আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে কেন একঘরে হতে হচ্ছে নওয়াজের কাছে তা জানতে চান বিরোধীরা। নওয়াজকে নিশানা করে পিপিপি নেতার মন্তব্য, ‘‘পাকিস্তানের বিদেশনীতি এত দুর্বল কেন? আমরা এতটা একা হয়ে যাচ্ছি কেন?’’