খিদেয় ছটফট করছে গোটা গাজ়া ভূখণ্ড। আবার ত্রাণশিবিরে খাবার আনতে-যেতেও আতঙ্ক! যখন-তখন সেখানেও বোমাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলছে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট বলছে, গাজ়ায় অনাহারের মহামারি দেখা দিয়েছে। সেখানে প্রায় ১৯ হাজার শিশু ভয়ানক অপুষ্টির শিকার।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত গাজ়ার ১৮,৭৪১ শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। এখনও তাদের চিকিৎসা চলছে। চলতি জুলাই মাসেই অপুষ্টিতে আক্রান্ত ১৬৪৮ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৭ শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, ‘‘গাজ়ায় এখন যে গতিতে এবং যে পরিমাণে ত্রাণ পৌঁছোচ্ছে, তা একেবারেই পর্যাপ্ত নয়। তাতে গাজ়ার সব মানুষের খিদে মিটবে না। ওঁরা দিনের পর দিন না খেয়ে রয়েছে।’’
ইজ়রায়েলের অবরোধের কারণে এক সময়ে গাজ়ায় ত্রাণ এবং মানবিক সাহায্য পৌঁছোনো প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। তবে বিভিন্ন দেশের কড়া নিন্দা এবং সমালোচনার পর সুর নরম করে ইজ়রায়েল। কড়াকড়ি শিথিল করে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।
কিন্তু গাজ়ায় যে ত্রাণশিবির চলছে, তা-ও মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ রাষ্ট্রপুঞ্জের। গাজ়ায় মূলত আমেরিকার অর্থে ত্রাণশিবির চালায় ‘গাজ়া হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ বা জিএইচএফ। সেই শিবিরগুলিও দিনের পর দিন বন্ধ থাকে। সংস্কারের কাজ চলছে বলে দাবি করে তা বন্ধ করে রাখা হয়। ইজ়রায়েলি বাহিনী হুঁশিয়ারি দেয়, ত্রাণশিবিরের দিকে এক পা এগোলে ফল ভাল হবে না। ফলে প্রাণভয়ে সে পথে হাঁটেনও না গাজ়ার বহু মানুষ। আর যাঁরা যান, তাঁদেরও হামলার শিকার হতে হয়। মঙ্গলবারই গাজ়ায় খাবারের লাইনে দাঁড়ানো অভুক্ত মানুষদের উপর ইজ়রায়েল বোমাবর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে (ভারতীয় সময়) পর পর ইজ়রায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে খাবার বা ত্রাণ নিতে গিয়েই প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জনের বেশি।
সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজ়িরা’ গাজ়ার স্বাস্থ্য প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ২৭ মে থেকে এখনও পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে গাজ়ায় ৪০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্য হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। আহতের সংখ্যাও প্রায় হাজার।