Advertisement
E-Paper

নেপালের শাসনভার হাতে তুলে নিল সেনা, দেশ জুড়ে জারি কার্ফু! জেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা রুখতে গুলি, নিহত পাঁচ

ছাত্র-যুব আন্দোলনে সোমবার এবং মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় নেপালে। কাঠমান্ডু থেকে বিদ্রোহের সূত্রপাত হলেও তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে নেপাল জুড়ে। তবে বুধবার সকাল থেকে নতুন করে বড় কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি ভারতের পড়শি দেশে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৫২
Nepal Army takes charge amid crisis situation

নেপালের শাসনভার হাতে নিল সেনাবাহিনী। ছবি: রয়টার্স।

প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির ইস্তফার পরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি নেপালে। বর্তমানে ভারতের পড়শি দেশের শাসনভার সেনার দখলে। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বুধবার সকাল থেকে নেপালে বড় ধরনের কোনও অশান্তির ঘটনা না ঘটলেও চলছে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নেপালের বাঁকে জেলার সংশোধনাগারের সংঘর্ষে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। অন্য দিকে, আনুষ্ঠানিক ভাবে নেপালের দায়িত্ব নিল সে দেশের সেনাবাহিনী। বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, যত দিন পর্যন্ত না নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে, তত দিন দেশের শাসনভার চালাবে তারা। শুধু তা-ই নয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশ জুড়ে কার্ফু জারি করা হয়েছে সেনার তরফে।

ছাত্র-যুব আন্দোলনে সোমবার এবং মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় নেপালে। কাঠমান্ডু থেকে বিদ্রোহের সূত্রপাত হলেও তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে নেপাল জুড়ে। হাজার হাজার বিদ্রোহী নেমে পড়েন রাস্তায়। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান তাঁরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভের আগুনের আঁচে পুড়তে থাকে নেপালের পার্লামেন্ট ভবন, ওলি এবং তাঁর মন্ত্রীদের বাসভবন। সে দেশের সুপ্রিম কোর্টেও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার খবর মেলে।

বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে নেপালের জেলগুলিতে বিদ্রোহের আগুন ছড়ায়। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বন্দিদের সংঘর্ষের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। জেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করেন শয়ে শয়ে বন্দি। প্রতিরোধ করতে গেলে আক্রান্ত হন নিরাপত্তারক্ষীরা। পাল্টা গুলিও চালান তাঁরা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বাঁকের সংশোধনাগারে বন্দিরা পালানোর চেষ্টা করতেই গুলি চালায় পুলিশ। তাদের গুলিতে সাত জন আহত হন বলে খবর। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচ জনের মৃত্য হয়।

বাঁকে, পোখরান জেলে হামলা চালান আন্দোলনকারীরা। খবর, এখনও পর্যন্ত ১৬০০ জন বন্দি বিভিন্ন জেল থেকে পালিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নেপালের বিভিন্ন দিকে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সংবেদনশীল এলাকায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার রাতেই আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নেপালের সেনাপ্রধান অশোকরাজ সিগডেল। বিক্ষোভকারীদের দাবিদাওয়া কী, তা জানাই উদ্দেশ্য ছিল ওই বৈঠকের। সূত্রের খবর, বুধবার নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদলের বৈঠকে বসার কথা। সেই বৈঠকে মধ্যস্থতার করবে নেপালের সেনাবাহিনী। আশা করা হচ্ছে, ওই বৈঠক থেকে রফাসূত্র বার হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী ওলির ইস্তফার পর বর্তমানে নেপালের দায়িত্বে সেনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে তারা। নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। দেশে লুটপাট চালালে, ভাঙচুর করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে, এমনটাই জানিয়ে নেপালের সেনাবাহিনী। দেশের নাগরিকদেরও সহযোগিতা চেয়েছে তারা। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নেপাল সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবনও। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে অশোকরাজের আহ্বান, ‘‘প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে বিরত থেকে আলোচনায় বসুন। কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে আমাদের।’’

নেপালের সেনাবাহিনী জানায়, দেশের সার্বভৌমত্ব, বাসিন্দাদের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে বদ্ধপরিকর। তবে সেনার দাবি, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দেশের অস্থির পরিস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। তাই সকলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

Nepal Unrest Nepal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy