E-Paper

পুজোর ছুটি কাকে বলে, জানলই না বাচ্চাগুলো

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে লুক্সেমবার্গের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। রাতের দিকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর দিনের বেলা ১৮ ডিগ্রি। ইউরোপীয় শরতের এই মনোরম পরিবেশে ঢাকের তালে, উলুধ্বনি ও ধুনুচি নাচ সহযোগে দেবীবরণের যে মোহময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তা ব্যাখ্যাতীত।

চন্দ্রাণী দে

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৪৬
লুক্সেমবার্গের দুর্গাপুজো।

লুক্সেমবার্গের দুর্গাপুজো। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতি বছরের মতো এ বারও লুক্সেমবার্গের আকাশে বাতাসে যথাসময়েই বেজে উঠেছে মায়ের আগমনী শঙ্খধ্বনি। মা আসছেন এই অনুভূতিটাই অনেক বেশি আপন আমাদের কাছে। প্রায় দু’মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে এ বারের থিম প্ল্যানিং, খাওয়াদাওয়ার মেনু আর সন্ধ্যায় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের রিহার্সাল।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে লুক্সেমবার্গের তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। রাতের দিকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর দিনের বেলা ১৮ ডিগ্রি। ইউরোপীয় শরতের এই মনোরম পরিবেশে ঢাকের তালে, উলুধ্বনি ও ধুনুচি নাচ সহযোগে দেবীবরণের যে মোহময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তা ব্যাখ্যাতীত। এ ভাবেই আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছি বিদেশের মাটিতে।

পুজোতে দর্শনার্থীদের প্রতিমাদর্শনে যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, তাই এখন কুপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুজোর ভিড় দেখা আমাদের কাছে অনেক বড় পাওনা। কিন্তু কোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এই নতুন উদ্যোগ। সেই ছোটবেলায় নতুন জামা পরে পুজোতে আনন্দ করতে যাওয়া থেকে শুরু করে আজ এই পুজোর আয়োজনে সক্রিয় দায়িত্ব পালনের যে যাত্রা, তা আমাদের সমৃদ্ধ করেছে।

কলকাতার পুজোর কোনও অংশই বাদ যায় না আমাদের লুক্সেমবার্গের পুজোতে। সকলেরই বিশেষ নজর থাকে খাবারদাবারের দিকে। দই ফুচকার স্টল থেকে শুরু করে দোসা, ইডলি এমনকি এগ রোল, বিরিয়ানির স্টলেরও ব্যবস্থা করা হয়। ছোট থেকে আমাদের স্মৃতিতে দুর্গাপুজোর যে আনন্দ-চিত্র অঙ্কিত হয়ে রয়েছে, তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি আমরা। দীর্ঘ সাত বছর আমরা দেশের পুজো দেখা থেকে বঞ্চিত। কিন্তু মাকে এ ভাবে কাছে পেয়ে আমরা এই পাঁচ দিন কতটা আনন্দে থাকি, তা লিখে বোঝানো অসম্ভব।

একটাই শুধু দুঃখ। পুজোর ছুটির যে আনন্দ, সেটা আমাদের বাচ্চাগুলো বুঝলই না। স্কুলে ছুটি চাইলে শুধু দু’দিন পর্যন্ত ছুটি পাওয়া যায়, তার বেশি ছুটি নিতে গেলে শিক্ষা মন্ত্রকের লিখিত অনুমতি নিতে হয়। সেটা তো আর সম্ভব হয় না। তাই পুজোর ক’টা দিনেও বাচ্চারা সকাল সাতটাতেই স্কুলে চলে যায়, আর বাড়ি ফেরে সেই বিকেল পাঁচটায়।

তার পরে সেজেগুজে সবাই মিলে পুজোমণ্ডপে যাওয়ার তোড়জোড়। শুধু এখানকার বাঙালিরাই নন। লুক্সেমবার্গের পড়শি দেশ, যেমন ফ্রান্স, জার্মানি ও বেলজিয়াম থেকে অনেকেই আমাদের পুজো দেখে বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাঁদের দেখলে মনে হয়, আমাদের এই পুজোর আয়োজন সার্থক হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Puja Vacation Luxembourg Bengali Festival Bengali Rituals

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy