Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
গির্জায় হামলা

জন্মদিনে পাওয়া টাকায় বন্দুক কিনেছিল ডিলান

ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিটা সদ্য কৈশোর পেরোনো আর পাঁচটা ছেলের মতোই সাদামাঠা। এই ছেলে যে অনায়াসে ন’টা লোককে খুন করতে পারে, মুখ দেখে তা ঘুণাক্ষরেও বোঝা যায় নয়।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০২:১৫
Share: Save:

ফেসবুক প্রোফাইলের ছবিটা সদ্য কৈশোর পেরোনো আর পাঁচটা ছেলের মতোই সাদামাঠা। এই ছেলে যে অনায়াসে ন’টা লোককে খুন করতে পারে, মুখ দেখে তা ঘুণাক্ষরেও বোঝা যায় নয়।

আমেরিকার চার্লসটনের আফ্রো-আমেরিকান গির্জায় হামলায় অভিযুক্ত ডিলান স্টর্ম রুফের ফেসবুকের এই ছবি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ইন্টারনেটে। ছবিতে আপাত সাধারণ ছেলেটার গায়ে যে কালো শার্টটা উঁকি মারছে, তা নিয়েই চলছে বিতর্ক। ডিলানের জামায় রয়েছে দু’টি পতাকা। প্রথমটি দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণের মাধ্যমে বিভেদনীতি আইন চালুর সময়ের পতাকা। দ্বিতীয়টি, এক সময়ের শ্বেতাঙ্গশাসিত রোডেশিয়ার (যার বর্তমান নাম জিম্বাবোয়ে)। যা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের প্রতীক হিসেবেই ব্যবহার হয়ে আসছে!

গত কাল পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ডিলান। আজ তার বিরুদ্ধে ন’জনকে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। পুলিশ জানিয়েছে, টিভিতে ডিলানের ছবি দেখে তাকে চিনতে পারেন ডেবি ডিলস নামে উত্তর ক্যারোলাইনার এক দোকানি। তিনিই খবর দেন পুলিশকে।

ডিলানের ছোটবেলার বন্ধু জোসেফ মিক জানিয়েছেন, ডিলান আগাগোড়াই বর্ণবিদ্বেষী। তাঁর কথায়, ‘‘গায়ের রং নিয়ে ও মন্তব্য করত। মনে করত শ্বেতাঙ্গ আর কৃষ্ণাঙ্গরা একসঙ্গে থাকতে পারে না।’’ জোসেফের দাবি, ডিলান বলত ভয়ানক কিছু একটা করবে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২১ বছরের জন্মদিনে বাবার উপহার দেওয়া অর্থে একটা হ্যান্ডগান কেনে ডিলান। সেই বন্দুক নিয়েই সে গির্জায় চড়াও হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। ডিলানের বন্দুকটি চুপিসাড়ে সরিয়ে রেখেছিলেন জোসেফ। কিন্তু বাড়িতে বন্দুক রেখে কোনও সমস্যায় জড়াতে চাননি বলে ডিলানকে সেটি ফিরিয়েও দেন। জোসেফের কথায়, ‘‘এখন নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি হয়তো এই ঘটনা থামাতে পারতাম।’’ ডিলানের আর এক বন্ধু ডালটন টাইলারের দাবি, রাস্তায় কৃষ্ণাঙ্গদের কটূক্তি করত ডিলান। বলেছিল, সে গণযুদ্ধ শুরু করবে!

পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে একটি শপিংমলে গিয়ে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা এবং প্রশ্ন করার অভিযোগ রয়েছে ডিলানের বিরুদ্ধে। এক বার মাদক-সহ গ্রেফতারও হয় সে। কলম্বিয়ার দক্ষিণপূর্বের একটি এলাকায় থাকে ডিলান। সেখানে বহু কৃষ্ণাঙ্গের বাস। ডিলানের ফেসবুক বন্ধুতালিকাতেও আছেন কয়েক জন কৃষ্ণাঙ্গ। আজ ডিলানের কাকা অবশ্য দাবি করেছেন, বর্ণবিদ্বেষের মনোভাব ছিল না ডিলানের।

গত কালই গির্জায় হামলার নিন্দা করেন আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি প্রশ্ন তোলেন আমেরিকার অস্ত্র আইন নিয়েও। আজ দক্ষিণ ইতালির একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে গির্জায় হামলা নিয়ে মুখ খোলেন মিশেল ওবামাও। তাঁর কথায়, ‘‘এমন ট্র্যাজেডি আমরা দেখেছি। তবে প্রার্থনা ঘরে এই হত্যাকাণ্ড ভয়ঙ্কর। যাঁরা যন্ত্রণায় আছেন, তাঁদের জন্য প্রার্থনা করছি। এক দিন দুর্যোগের মেঘ কেটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE