আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের ক্ষমতা নেই, তাই ইরানে হামলা করবেন (আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট) বারাক ওবামা! এক দশকেরও বেশি সময় আগে ওবামাকে বিঁধে এমনটাই মন্তব্য করেছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পশ্চিম এশিয়ার সংঘর্ষে আমেরিকা সরাসরি জড়িয়ে পড়তেই ট্রাম্পের পুরনো সেই পোস্ট ফের ভেসে উঠতে শুরু করেছে সমাজমাধ্যমে।
ট্রাম্পের নির্দেশে রবিবার ভোরে ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকার সেনাবাহিনী। পশ্চিম এশিয়ার সংঘর্ষে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা। অন্য দু’টি দেশের সংঘর্ষে আমেরিকার সরাসরি জড়িয়ে পড়া কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ওবামাকে নিশানা করে ট্রাম্পের পুরনো কিছু মন্তব্য সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ওবামাকে নিশানা করে বিবিধ মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তার মধ্যে ২০১৩ সালের একটি সমাজমাধ্যম পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “মনে করে দেখুন, অনেক দিন আগেই আমি বলে দিয়েছিলাম। (তৎকালীন) প্রেসিডেন্ট ওবামা ইরানে হামলা করবেন। কারণ, ঠিক ভাবে আলোচনা করে সমাধানসূত্র বার করার ক্ষমতা তাঁর নেই।”
বস্তুত, ইরান এবং আমেরিকার মধ্যে পরমাণুচুক্তি নিয়ে আলোচনার মাঝেই ইজ়রায়েল হামলা চালায় তেহরানে। ওই হামলার জেরে ভেস্তে যায় আলোচনা। এর পরেও ট্রাম্প সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে ইরান-ইজ়রায়েল সংঘর্ষে ইতি টানা যায় কি না, তা দেখতে চান তিনি। ইরানে হামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলোচনার জন্য দু’সপ্তাহ সময় নেওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। কিন্তু দু’সপ্তাহ তো দূর, ট্রাম্পের ওই বার্তার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের উপর আক্রমণ চালিয়েছে আমেরিকার সামরিক বাহিনী।
আরও পড়ুন:
পশ্চিম এশিয়ার এই সংঘর্ষে মার্কিন বাহিনীর সরাসরি জড়িয়ে পড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আমেরিকার অন্দরেও। আমেরিকার হাউসের সংখ্যালঘু ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফ্রিস এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, মার্কিন কংগ্রেসে কোনও আলোচনা বা অনুমোদন না নিয়েই ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। জেফ্রিস বলেন, “ট্রাম্প পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এখন যুদ্ধের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছে। আমি প্রার্থনা করি, পশ্চিম এশিয়ায় আমাদের বাহিনী যেন নিরাপদ থাকে।”