Advertisement
E-Paper

তালিবানের সঙ্গে বৈঠক, বিতর্কে মোদী সরকার

আজ কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন তুলেছেন, তালিবানের সঙ্গে ‘নন অফিশিয়াল’ স্তরে কথা বলতে যদি নরেন্দ্র মোদী সরকারের আপত্তি না থাকে, তা হলে জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে কেনই বা কথা বলবে না কেন্দ্র?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৩
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের বিদেশনীতি নিয়ে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের বিদেশনীতি নিয়ে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি নিতে গিয়ে ফের বিতর্কে ভারতের বিদেশনীতি। আজ মস্কোয় আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত বৈঠকে ভারতের ‘নন অফিশিয়াল’ স্তরে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং কূটনীতিক শিবির।

আজ কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন তুলেছেন, তালিবানের সঙ্গে ‘নন অফিশিয়াল’ স্তরে কথা বলতে যদি নরেন্দ্র মোদী সরকারের আপত্তি না থাকে, তা হলে জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে কেনই বা কথা বলবে না কেন্দ্র? এই প্রশ্নটি ক্রমশ বড় আকার ধারণ করতে পারে আঁচ করে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়। বলা হয়, আফগানিস্তানের শান্তি, সুস্থিতি, নিরাপত্তা এবং বহুত্ববাদের প্রতিষ্ঠা চায় ভারত। এই উদ্যোগে ভারত লাগাতার শামিল হয়েছে। আজও সেটাই করা হয়েছে। তালিবানের সঙ্গে কোনও কথা বলছে না ভারত। কিন্তু তালিবানের উপস্থিতিতে আফগানিস্তান সরকারের নেতৃত্বাধীন সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে মাত্র।

প্রশ্ন উঠছে, ওই একই সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন তালিবানের একাধিক নেতা। গত কালই বিবৃতি দিয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, আফগানিস্তানের মানুষ এবং সরকারের নেতৃত্বে সে দেশে শান্তিপ্রক্রিয়া ফেরানো এবং নিরাপত্তা মজবুত করার প্রশ্নে ভারত সব রকম ভাবে পাশে রয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছিল, মস্কোর উদ্যোগে শুক্রবারের বৈঠকটিতে ভারত যোগ দেবে ‘নন অফিশিয়াল’ স্তরে। কোনও সরকারি কর্তা বা মন্ত্রী নন, ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে ভারতের প্রাক্তন দুই রাষ্ট্রদূত। তাঁরা যথাক্রমে হলেন অমর সিন্হা এবং টিসিএ রাঘবন। এই মুহূর্তে এঁরা ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্কে’র সদস্য হলেও কোনও সরকারি পদে নেই।

আরও পড়ুন: মানবাধিকার প্রশ্নে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনের ঢাল হল দিল্লি!

বিদেশনীতির পক্ষে বিষয়টি নিঃসন্দেহে নতুন। কারণ এর আগে যে ‘ট্র্যাক-টু’ কূটনীতি হয়নি, তা নয়। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সরকারি ভাবে বিবৃতি দিয়ে সেই ‘ট্র্যাক টু’-র কথা ঘোষণা করেননি। আজ সকালেই ওমর আবদুল্লা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। টুইটারে তাঁর প্রশ্ন, ‘যদি তালিবানের সঙ্গে ‘নন অফিশিয়াল’ দৌত্য মোদী সরকারে কাছে গ্রহণযোগ্যই হয়, তা হলে জম্মু-কাশ্মীরের মূল স্রোতের বাইরে থাকা অংশের সঙ্গে ‘নন অফিশিয়াল’ আলোচনা কেন করা হবে না? জম্মু-কাশ্মীরের ঘুণ ধরে যাওয়া স্বায়ত্তশাসনের দাবি এবং তাকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে কেন ‘নন অফিশিয়াল’ স্তরে আলোচনা হবে না?’

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, গোটা ঘটনাটি যে জম্মু-কাশ্মীরের দিকে এ ভাবে ঘুরে যাবে, তা আগে ভাবেনি মোদী সরকার। ওমর আবদুল্লা আজ যা বলেছেন, তা এর পর বাকি বিরোধীদের অনেকেই বলতে শুরু করবেন— এমন আশঙ্কা থেকেই স্থির হয়, ক্ষত মেরামতি করতে হবে। আফগানিস্তানে তালিবানের লাগাতার হিংসার ফলে সেখানে কর্মরত ভারতীয় সংস্থাগুলি ও ভারতীয় কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় সেই তালিবানের সঙ্গে বৈঠকের প্রচার ভুল বার্তা দিতে পারে। তার পরেই দ্রুত সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। সেখানে মুখপাত্র রবীশ কুমার জানান যে, তালিবানের সঙ্গে সরাসরি কোনও কথা ভারত বলছে না। সম্মেলনটি হচ্ছে আফগানিস্তান সরকারের উপস্থিতিতে এবং একমাত্র সেই সরকারকেই সে দেশে মান্যতা দেয় সাউথ ব্লক। ‘নন অফিশিয়াল’ পর্যায়ে বৈঠকটি যে ঠিক কী এবং কেন— তা খোলসা করেননি মুখপাত্র। শুধু বলেছেন, ‘নন অফিশিয়াল’ এই শব্দ দু’টির ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। তাঁর কথায়, ‘‘এই শব্দদু’টি নিজেরাই নিজেদের ব্যাখ্যা করে দিয়েছে।’’

Foreign Policy Afghanistan Meeting Omar abdulla
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy