আট বছর আগে এই দিনটিতেই মায়ানমার সেনা এবং তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন প্রদেশ থেকে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পিছনে ফেলে এসেছিলেন জ্বলন্ত বাড়িঘর আর নিহত স্বজনদের দেহ। তাঁর পর থেকে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সত্ত্বেও সেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আর দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি। দেশত্যাগের অষ্টম বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা রোহিঙ্গারা এ বার নিরাপদে মায়ানমারে ফেরার দাবিতে সরব হলেন।
আমেরিকার সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানাচ্ছে, কক্সবাজারের কুটুপালং শরণার্থী শিবিরের সামনে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জমায়েত করেন। নিরাপদে মায়ানমারে ফেরার দাবি তোলেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন (ওএইচসিএইচআর) এবং কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে বর্তমানে নথিভুক্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা সাড়ে ১২ লক্ষ। এর মধ্যে আট লক্ষই এসেছিলেন ২০১৭ সালের ২৫ অগস্ট শুরু হওয়া জুন্টাসেনার হামলার পরের কয়েক মাসে।
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় দু’বার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলেও বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে ফেরানো সম্ভব হয়নি। বরং গত দেড় বছরে জুন্টাফৌজের সঙ্গে বিদ্রোহী জনজাতি সংগঠন রাখাইন আর্মির সংঘাতের জেরে নতুন করে এসেছেন ১ লক্ষ ২৪ হাজার রোহিঙ্গা। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মানবতা সহায়তাও অপ্রতুল হয়ে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রাম ডিভিশনের বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এই আবহে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যার সমাধানে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে। ইউনূসের উপস্থিতিতে প্রথমটি সোমবার কক্সবাজারে শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, দ্বিতীয় সম্মেলনটি হবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর, আমেরিকার নিউ ইয়র্কে। তৃতীয়টি হবে ৬ ডিসেম্বর কাতারে।