বালোচিস্তানে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান শেষ হয়েছে। মুক্ত করা হয়েছে ৩০০-র বেশি পণবন্দিকে। বিদ্রোহীরা সকলেই নিহত হয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন পাকিস্তান সেনার এক আধিকারিক। অভিযানে পাক সেনার ২৮ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘৩৪৬ জন পণবন্দিকে মুক্ত করা হয়েছে। নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে ৩০ জন সন্ত্রাসবাদী নিহত।’’
জাফর এক্সপ্রেসে পাক সেনার ২৭ জন আধিকারিক সাধারণ যাত্রী হিসাবে ছিলেন। তাঁরা কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন না। তাঁদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে। এই খবর নিশ্চিত করেছে পাক সেনা। এ ছাড়া, বিদ্রোহীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে সেনাবাহিনীর এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃত সেনার সংখ্যা ২৮ জন।
আরও পড়ুন:
বুধবার বিদ্রোহীরা দাবি করেছিলেন, তাঁরা ৫০ জন যাত্রীকে হত্যা করেছেন। সরকার তাদের কথা না-মানলে বাকিদেরও হত্যা করা হবে। ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন বিদ্রোহীরা। তাঁরা মূলত বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-র সদস্য। এই সংগঠনের যে সমস্ত সদস্যকে পাক সেনা বন্দি করেছে, তাঁদের মুক্তির দাবিতে ট্রেন অপহরণ করা হয়েছিল। মঙ্গলবার থেকেই পণবন্দিদের মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাক নিরাপত্তাবাহিনী। মুহুর্মুহু গুলির লড়াই চলছিল। তবে বিস্ফোরক ভর্তি জ্যাকেট পরে মহিলা এবং শিশুদের ‘মানবঢাল’ বানিয়ে লড়ছিলেন বিদ্রোহীরা। পণবন্দিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। ফলে অভিযানে জটিলতা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের হত্যা করে যাত্রীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানাল পাক বাহিনী।
সন্ত্রাসবাদী হামলায় মাঝেমাঝেই কেঁপে ওঠে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বালোচিস্তান। তবে এই ধরনের এক্সপ্রেস ট্রেন অপহরণের ঘটনা বিরল। যে সব যাত্রীকে ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তাঁরা বর্ণনা করেছেন। কী ভাবে গুলির শব্দের মাঝে কোনও রকমে তাঁরা দমবন্ধ করে টিকেছিলেন, মুক্তির পর জানিয়েছেন বিশদে। মৃত্যুর আতঙ্ক প্রতি মুহূর্তে তাঁদের গ্রাস করেছিল। কত যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, এখনও পর্যন্ত পাক কর্তৃপক্ষের তরফে সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।