Advertisement
E-Paper

অনির্বাচিত সরকারের সাজানো আদালতের রায়: ফাঁসির সাজা নিয়ে হাসিনা! বাংলাদেশ জুড়ে বন্‌ধ ডাকল আওয়ামী লীগ

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সোমবার রায় ঘোষণা করেছে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। সাজা শুনে এ বার প্রতিক্রিয়া জানালেন দেশান্তরী হাসিনা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:২২
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। — ফাইল চিত্র।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সোমবার রায় ঘোষণা করেছে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে। সাজা শুনে এ বার প্রতিক্রিয়া জানালেন দেশান্তরী হাসিনা। সব অভিযোগ অস্বীকার করে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এই রায় ‘পক্ষপাতদুষ্ট’। এ হেন রায়ের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দেশজোড়া বন্‌ধের ডাক দিল আওয়ামী লীগও।

রায় ঘোষণার পর লিখিত বিবৃতি দিয়ে হাসিনা দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলির সপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই। বরং তাঁর আমলে মানবাধিকার এবং উন্নয়নমূলক অনেক কাজ হয়েছে। সে জন্য তিনি গর্বিতও। আওয়ামী লীগ নেত্রীর দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই রায় দেওয়া হয়েছে, তা-ও আবার একটি অনির্বাচিত সরকারের অধীনস্থ অবৈধ ট্রাইবুনাল সেই রায় দিয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের রায়ও প্রত্যাখ্যান করেছেন হাসিনা। তাঁর কথায়, ‘‘এই রায় অন্তর্বর্তিকালীন সরকারে থাকা চরমপন্থী ব্যক্তিদের নির্লজ্জতা ও খুনি মনোভাবের প্রতিফলন মাত্র। বাংলাদেশের শেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ করতে এবং আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক ভাবে ভেঙে দিতে এই কাজ করা হয়েছে।’’

হাসিনা লিখেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে আনা ট্রাইবুনালের সব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করছি। গত বছরের জুলাই-আগস্টে যত জনের মৃত্যু হয়েছে, সে জন্য আমি শোকাহত। কিন্তু আমি কিংবা কোনও রাজনৈতিক নেতা কখনওই কোনও আন্দোলনকারীকে হত্যা করার নির্দেশ দিইনি। আমাকে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগই দেওয়া হয়নি। এমনকি, নিজের পছন্দমতো আইনজীবীও বাছার সুযোগ দেওয়া হয়নি আমাকে। এই ট্রাইবুনাল পক্ষপাতদুষ্ট।’’ হাসিনার দাবি, যে সব বর্ষীয়ান আইনজীবী বা বিচারপতি কোনও না কোনও সময় প্রকাশ্যে পূর্ববর্তী সরকারের পক্ষ নিয়েছিলেন, তাঁদের সকলকে হয় এক এক করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অথবা চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেছে বেছে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সদস্যদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মুজিব-কন্যা জানিয়েছেন, তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার এই রায় আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। হাসিনা বলেন, ‘‘মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তিকালীন প্রশাসন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে দেশের বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে। বিশ্বের কোনও প্রকৃত পেশাদার আইনজীবী বাংলাদেশের ট্রাইবুনালের এই রায় সমর্থন করবেন না।’’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ইউনূসের আমলে বাংলাদেশ আরও ‘বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং সামাজিকভাবে পশ্চাদ্‌গামী’ একটি শাসনব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে, যেখানে পদে পদে নারী ও সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ, ভিন্নমতের দমনপীড়ন চলছে। অর্থনীতিও ভেঙে পড়েছে। অথচ ক্ষমতায় থাকার জন্য এত দিন ধরে ইচ্ছাকৃত ভাবে নির্বাচনে দেরি করেছেন ইউনূস। নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগকে। হাসিনা লিখেছেন, ‘‘বৈধ ট্রাইবুনালে উপযুক্ত প্রমাণ-সহ বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে আমি ভয় পাই না। তবে আমি জানি, অন্তর্বর্তী সরকার এই চ্যালেঞ্জ মানবে না। কারণ, তারা জানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা গেলে তারা আমাকে অব্যাহতি দেবে।’’

গত বছর অগস্টে বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পতন হয়। দেশ ছাড়েন তিনি। এর পর পুনর্গঠিত হয় সে দেশের আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল। হাসিনা সরকারের তৈরি করা ট্রাইবুনালেই শুরু হয় তাঁর বিরুদ্ধে প্রথম মামলার বিচার। বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালত এবং থানায় এখনও পর্যন্ত হাসিনার বিরুদ্ধে ৫৮৬টি মামলা হয়েছে। ৩৯৭ দিন ধরে বিচারপ্রক্রিয়া চলার পর সোমবার সাজা ঘোষণা হয়েছে ওই মামলায়। হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। রায় প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, ‘‘এই আদালত অবৈধ। বাংলাদেশের জনগণ এই রায় প্রত্যাখ্যান করছে। আগামিকাল সারা বাংলাদেশে সকাল-সন্ধ্যা শাটডাউন হবে। যত ক্ষণ না অবৈধ ইউনূস সরকার পদত্যাগ করবে, আমাদের সংগ্রাম ততই তীব্র হবে। একদিন হাসিনা বীরের বেশে বাংলার জনগণের প্রিয় দল হিসাবে ফিরবেন। আমাদের জয় অবশ্যম্ভাবী।’’

Sheikh Hasina Bangladesh death sentence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy