নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শফকতের দেহ। ছবি: এএফপি।
পর পর চার বার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। এই ভাবে প্রবল টানাপড়েনের মধ্যেই আজ ভোরে করাচি সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসি দেওয়া হল এক যুবককে। যার জেরে বিতর্কে উত্তাল গোটা বিশ্ব।
এক পাক যুবকের ফাঁসি ও মৃত্যুদণ্ড নিয়ে কেনই বা এত বিতর্ক?
পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৪ সালে শফকত হুসেন নামে ওই যুবক সাত বছরের এক নাবালককে অপহরণ করে তাকে খুন করে। শফকত নিজেও তখন চোদ্দো বছরের কিশোর। একই বছরে খুনের দায়ে তাকে গ্রেফতার করে দোষী সাব্যস্ত করে পাক সন্ত্রাসদমন আদালত। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতেই ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল শফকতের। কিন্তু বয়স সংক্রান্ত বিতর্কে ফাঁসি স্থগিত রাখতে বাধ্য হয় পাক প্রশাসন।
পাকিস্তানের নাবালক বিচার সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, কেউ যদি আঠারো বছর বয়স হওয়ার আগে কোনও অপরাধ করে, তবে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো যাবে না। তবে শফকতের ক্ষেত্রে কেন এই আইন খাটবে না বলে প্রশ্ন তোলে বহু আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন। কারণ তাদের দাবি, শফকত যখন অপরাধ করেছিল, তখন সে নাবালক। আর এ নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ বাড়তে থাকায় স্থগিত হয়ে গিয়েছিল মৃত্যুদণ্ড।
আবার শফকতের আইনজীবী দাবি করেছিলেন, গ্রেফতারির সময় শফকতের উপর অত্যাচার করে তার স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছিল। এমনকী অপরাধের সময় তার বয়স তেইশ ছিল বলেও স্বীকার করানো হয় তাকে। শফকতের আইনজীবীদের এমন অভিযোগের পর শফকতের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরাও। জেলে শফকতের উপর অত্যাচার করে স্বীকারোক্তি দেওয়ানো হয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের কাছে তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তাঁরা।
এর পর মার্চে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী নিসার আলি খান শফকতের বয়স সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তদন্তের পর জানা যায়, শফকত যখন ওই শিশুটিকে অপহরণ এবং খুন করেছিল, তখন তার বয়স ছিল ২৩। এমনটাই দাবি করেছে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক।
তদন্তের পর শফকতের ফাঁসির নির্দেশ ফের বহাল রাখা হয়। তবে শফকতকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যেতে থাকেন তার আইনজীবী। ফাঁসির নির্দেশ খারিজ করার জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। এর পর ওই মামলা সুপ্রিম কোর্ট অবধিও পৌঁছয়। সেখানেও বয়স সংক্রান্ত বিতর্কে জল ঢেলে ফাঁসির সাজা বহাল থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy