মার্কিন বাহিনীর কম্যান্ডার জন নিকোলসন। ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধুত্বের সুরটা কাটতে শুরু করেছিল গত সপ্তাহ থেকেই।
নয়া আফগান নীতি ঘোষণা করতে গিয়ে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানকে বিদ্ধ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের সুরে সুর মিলিয়েই মার্কিন বিদেশ সচিব রেক্স টিলারসন সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, অবিলম্বে সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়া বন্ধ না করলে আমেরিকার ‘বিশেষ বন্ধু’র তকমা হারাতে পারে পাকিস্তান। বন্ধ হতে পারে আর্থিক অনুদানও।
আফগানিস্তানে ন্যাটো আর মার্কিন বাহিনীর কম্যান্ডার জন নিকোলসন জানিয়েছেন, পেশোয়ার, কোয়েট্টার মতো পাকিস্তানের শহরে আফগান তালিবান নেতারা আশ্রয় নিয়েছেন। জঙ্গি বিরোধী অভিযানে ইসলামাবাদ কতটা আগ্রহী এর থেকেই তার প্রমাণ মেলে।
নিকোলসনের এই মন্তব্যের পরে কড়া বিবৃতি দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের সরকার এতটাই ক্ষুব্ধ যে, এক মার্কিন কূটনীতিকের পাক সফর পিছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: ইয়াঙ্গন যাচ্ছেন পোপ, ঢাকাতেও
গত সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করার পরেই ইসলামাবাদ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, সন্ত্রাসে তারা মদত দেয় না। উল্টে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে গত কয়েক বছরে পাকিস্তান কতটা সাফল্য পেয়েছে, সেই হিসেব তুলে ধরেছিল তারা। কিন্তু গত শনিবার আফগানিস্তানের এক কাগজকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে পাকিস্তানের প্রসঙ্গ তোলেন জন নিকোলসন। ওসামা বিন লাদেন থেকে শুরু করে কোন কোন জঙ্গি নেতাকে এত দিন পাকিস্তান আশ্রয় দিয়েছে, সেই তালিকাও দেন তিনি।
জবাব দিয়েছে ইসলামাবাদও। সোমবার পাকিস্তান আসার কথা ছিল দক্ষিণ এশিয়ায় সহকারী মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যালিস ওয়েলস ও একটি প্রতিনিধি দলের। কাল রাতের দিকে পাক বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, অ্যালিসের ওই সফর পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে ওয়াশিংটনকে। এ ভাবে সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় পাক মন্ত্রীরা এক হাত নিয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনকে।
পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী এহসান ইকবালের বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তানের উপর হামলা চালাতে আফগান তালিবান আফগানিস্তানের মাটিকেই ব্যবহার করে। ওরা গোটা আফগানিস্তানের চল্লিশ শতাংশ অংশে আধিপত্য বজায় রেখেছে। এর মানে এই যে, পাকিস্তানে ওদের লুকোনোর দরকার নেই।’’ পাক নিরাপত্তা বাহিনী গত চার বছরে সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলিতে জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে কতটা সফল, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ইকবাল। এক ধাপ এগিয়ে পাক বিদেশমন্ত্রী আফগানিস্তানে মার্কিন ব্যর্থতা নিয়েও মুখ খুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমেরিকা পাকিস্তানকে বন্ধু হিসেবে ব্যবহার করেছে। আর সন্ত্রাসের ফল ভুগতে হয়েছে পাকিস্তানকে। আমেরিকা যদি ইসলামাবাদকে বিশ্বাস না-ই করে, ৩৫ বছর ধরে পাকিস্তান যে আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে, তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা শুরু করুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy