ইজ়রায়েল যদি তেহরানে পারমাণবিক হামলা চালায়, তবে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশে পারমাণবিক বোমা ফেলবে পাকিস্তান! ইরান-ইজ়রায়েল উত্তেজনার আবহে এ বার হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনটাই জানালেন ইরান সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক।
ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য তথা ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)-র সিনিয়র জেনারেল মোহসেন রেজ়াই সংবাদমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘পাকিস্তান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যদি ইজ়রায়েল ইরানের উপর পারমাণবিক বোমা ফেলে, তা হলে তারাও পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ইজ়রায়েলকে আক্রমণ করবে।’’ যদিও গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে ইজ়রায়েল সরাসরি হামলা চালানোর পরেও কোনও পাকিস্তানি সরকারি শীর্ষ আধিকারিককে জনসমক্ষে এ ধরনের বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন:
তবে তেহরানে হামলার পরেই বৃহত্তর মুসলিম ঐক্যের স্বার্থে ইরানের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাকিস্তান। এমনকি, দুই দেশের যুদ্ধে সরাসরি ইহুদি রাষ্ট্র ইজ়রায়েলকে নিশানা করেছেন পাকিস্তানের শীর্ষকর্তারা। এ বিষয়ে পাক বিদেশমন্ত্রী ইশক দার বলেন, ‘‘ইরানের উপর ইজ়রায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ইরানের জনগণের পাশে রয়েছে।’’ গত ১৪ জুন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ বলেন, ‘‘মুসলিম দেশগুলির উচিত ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। না হলে তাদেরও ইরান ও প্যালেস্টাইনের মতো পরিণতি হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইজ়রায়েল ইরান, ইয়েমেন এবং প্যালেস্টাইনকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। যদি মুসলিম দেশগুলি এখনই ঐক্যবদ্ধ না হয়, তা হলে প্রত্যেককেই একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।’’
গত ১৩ জুন ইজ়রায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে ‘পূর্বনির্ধারিত আক্রমণ’ শুরু করার পর থেকেই দুই দেশের যুদ্ধপরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই আক্রমণের নাম দিয়েছেন ‘অপারেশন রাইজ়িং লায়ন’। পর দিন থেকেই ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে ইরানও। প্রতিশোধমূলক ওই হামলার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩’। চার দিন পেরিয়ে গেলেও লড়াই থামেনি। এখনও পর্যন্ত দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। ইরানে শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ইজ়রায়েলি হামলায়। অন্য দিকে, ইরানের প্রত্যাঘাতে ইজ়রায়েলেও অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে রবিবার পর্যন্ত।