আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করতে চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। সোমবার মিশরের শর্ম-আল-শেখ শহরে ‘গাজ়া শান্তি সম্মেলন’ থেকে সেই বার্তাই দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ থামানো নিয়ে ট্রাম্পের দাবি শুরু থেকেই মেনে নিয়েছে ইসলামাবাদ। ওই সংঘর্ষবিরতিতে মার্কিন মধ্যস্থতার দাবি স্বীকার করে নিয়েছে তারা। তার জন্য অতীতেও ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল ইসলামাবাদ।
শুধু পাকিস্তান নয়, ইজ়রায়েলও ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল। ট্রাম্প নিজে এবং তাঁর সরকারের প্রতিনিধিরাও বার বার দাবি করেছেন, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ থামানোর তাঁর নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত। যদিও তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও থামাতে পারেননি তিনি। এ বছর ট্রাম্প নোবেল পান কি না, তা নিয়ে কৌতূহলও ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এ বছর শান্তিতে নোবেল তাঁর জোটেনি। কয়েক দিন আগেই নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ট্রাম্পকে টপকে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজ়ুয়েলার বিরোধী দলনেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো।
এ অবস্থায় সোমবার মিশরের ‘শান্তি সম্মেলন’ থেকে ফের ট্রাম্পের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবি তুললেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ়। তিনি বলেন, “ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ থামানো এবং সংঘর্ষবিরতিতে অনবদ্য অবদান রেখেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর আধিকারিক দল। এর জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল পাকিস্তান।” এর পরেই তিনি বলেন, “আজ আবার আমি নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য এই মহান প্রেসিডেন্টকে মনোনীত করতে চাই। কারণ আমি সত্যিই মনে করি যে তিনি (ট্রাম্প) শান্তি পুরস্কারের জন্য সবচেয়ে যোগ্য এবং দুর্দান্ত একজন প্রার্থী। তিনি শুধুমাত্র দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তিই ফেরাননি, তিনি লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনও বাঁচিয়েছেন।”
মিশরের এই ‘শান্তি সম্মেলনে’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ট্রাম্প। আমন্ত্রণ জানান মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফতেহ্ আল-সিসিও। তবে প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে যাননি। পরিবর্তে ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহকে মিশরে পাঠানো হয় মোদীর দূত হিসাবে। আমেরিকা এবং মিশরের যৌথ সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই শান্তি সম্মেলনে বক্তৃতার সময় ট্রাম্পও ভারত এবং পাকিস্তানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “ভারত দারুণ একটি দেশ। সে দেশেই নেতৃত্বে রয়েছেন আমার খুব ভাল এক বন্ধু। তিনি দারুণ কাজ করেছেন।” এর পরেই ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয় পাকিস্তান এবং ভারত খুব ভাল ভাবে একসঙ্গে থাকবে।” বলেই মঞ্চে তাঁর ঠিক পিছনেই দাঁড়িয়ে থাকা শাহবাজ়ের দিকে ঘুরে তাকিয়ে ট্রাম্প প্রশ্ন করেন, “তাই তো?” ট্রাম্পের ওই প্রশ্নে কোনও উত্তর দিতে শোনা যায়নি পাক প্রধানমন্ত্রীকে, কেবল তাঁর সজোরে হাসির শব্দই পাওয়া গিয়েছে। তাঁর প্রতিক্রিয়া দেখে হেসে ফেলেন ট্রাম্পও। তার পরে নিজের বক্তৃতায় ফিরে আসেন তিনি।
প্রায় দু’বছর ধরে চলতে থাকা হামাস-ইজ়রায়েল সংঘর্ষ থামানোর জন্য ট্রাম্পকে ইজ়রায়েলের সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেল আবিব। ট্রাম্পকে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিশরও।