প্রাণ দিয়েছিলেন প্রবীণ প্রত্নতাত্ত্বিক খালেদ আল-আসাদ। কিন্তু বাঁচল না তাঁর প্রিয় পালমিরা। পালমিরার অন্যমত আকর্ষণ বালশামিন মন্দির ধ্বংস করল ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর জঙ্গিরা। রবিবার বিস্ফোরক দিয়ে এই মন্দিরটির ধ্বংস করে দেয় আইএস জঙ্গিরা। সিরিয়ার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান এ কথা জানিয়েছেন। তবে ব্রিটেনের ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ অবশ্য জানিয়েছে, কয়েক মাস আগেই এই মন্দিরটি ধ্বংস করা হয়।
সিরিয়ার পালমিরা আইএস-এর দখলে আসার পরেই এই প্রত্নস্থলটি ধ্বংসের আশঙ্কা করছিলেন অনেকেই। আগাম আশঙ্কা থেকে পালমিরা-র অনেক প্রত্নবস্তুকে সরিয়ে ফেলা হয়। এই কাজের অন্যতম হোতা ছিলেন প্রবীণ প্রত্নতাত্ত্বিক খালেদ আল-আসাদ। এর আগে ইরাকের মসুল এবং নিমরুদে প্রত্নস্থলে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল আইএস। পাশাপাশি এই প্রত্নস্থল থেকে অনেক প্রত্নবস্তু চোরাবাজারে বিক্রিও করেছে আইএস। এর থেকে ভাল অর্থ লাভও হয়েছে আইএস-এর। তাই পালমিরা-র দখল নেওয়ার পরেই বহুমূল্য প্রত্নবস্তুর সন্ধানে খালেদ আল-আসাদকে বন্দি করে আইএস। প্রায় এক মাসের অকথ্য অত্যাচারের পরেও প্রবীণ এই প্রত্নতাত্ত্বিক সেই সন্ধান দেননি। এর পরেই খালেদ আল-আসাদের মুণ্ডচ্ছেদ করে আইএস। তারা এ বার ধ্বংস করে দিল পালমিরার অন্যতম আকর্ষণ বালশামিন মন্দির।
বালশামিন মন্দির প্রায় ২০০০ বছরের পুরনো। ফোনেশিয়ান ঝড় ও প্রজননের দেবতার উদ্দেশে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। মন্দিরের সব চেয়ে পুরনো অংশ ১৭ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয়েছিল। দু’হাজার বছর পেরিয়েও মন্দিরটি প্রায় অটুট ছিল। রবিবার এই মন্দির প্রচুর বিস্ফোরক আনে আইএস। তার পরে মন্দিরটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়। আইএস-এর সমর্থক এক ওয়েবসাইটেও এই খবর বেরিয়েছে।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে বাৎসরিক গড় প্রায় দেড় লক্ষ পর্যটক পালমিরায় আসতেন। সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে গ্রেকো-রোমান পদ্ধতি ও পারস্যের প্রভাবে নির্মিত এই প্রত্নস্থলে এখনও প্রায় এক হাজার স্তম্ভ, ৫০০ সমাধি রয়েছে। একে তাই ‘মরুভূমির মুক্তা’ বলে ডাকা হয়। এটি ইউনেস্কোর হেরিটেজের তালিকায় আছে। এই প্রত্নস্থলের প্রত্নসম্পদ হস্তগত করতেই এত দিন প্রত্নস্থলটির বিশেষ ক্ষতি করেনি। এমনকী এই পালমিরার অ্যাম্পিথিয়াটারে বন্দি সিরিয়ার সেনাদের মুণ্ডচ্ছেদও করে আইএস। কিন্তু খালেদ আল-আসাদের থেকে কোনও খবর না পাওয়ায় অবশেষে প্রত্নস্থলটির অন্যতম আকর্ষণকে ধ্বংস করল আইএস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy